Friday 31 December 2010

ডিজিটাল কারচুপি দিবসের সমাবেশ : যুদ্ধাপরাধী আতঙ্কে ভুগছে আওয়ামী লীগ -এটিএম আজহার



স্টাফ রিপোর্টার

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেছেন, ক্ষমতায় আসার পর পরই বর্তমান মহাজোট সরকার বিদেশিদের স্বার্থ রক্ষায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। টিপাইমুখ বাঁধ, করিডোর, বন্দর সুবিধা ইত্যাদি চুক্তি করলেও দ্রব্যমূল্য, আইনশৃঙ্খলার অবনতির নিয়ন্ত্রণসহ জনদুর্ভোগের সমাধানে সরকারের কোনো মাথা ব্যথা নেই। এতে প্রমাণিত হয়, তারা জনগণের ভোটের পরিবর্তে বিদেশিদের সমর্থনে কারচুপির মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছে। ব্যর্থতা ঢাকতেই সরকার ৩৯ বছর আগের যুদ্ধাপরাধ ইস্যু তুলেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যুদ্ধাপরাধী আতঙ্কে ভুগছে। এ ভয় ও অসুখে তারা শেষ হয়ে যাবে। তিনি বলেন, জামায়াতের আমির মাওলানা নিজামীসহ অন্য শীর্ষ নেতাদের ৬ মাস জেলে আটক রেখেও কোনো অভিযোগ গঠন করতে পারেনি সরকার। এভাবে বিনা অপরাধে আটক রেখে তারা চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে। এ সরকারের পতন হলে তাদের সব মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরীর উদ্যোগে ২০০৮ সালের নির্বাচনে ডিজিটাল কারচুপির প্রতিবাদ দিবস উপলক্ষে গতকাল বিকালে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। দলের ঢাকা মহানগরী ভারপ্রাপ্ত আমির হামিদুর রহমান আজাদ এমপির সভাপতিত্বে ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি নুরুল ইসলাম বুলবুলের পরিচালনায় মহানগরী অফিস চত্বরে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক অধ্যাপক মো. তাসনীম আলম, মহানগরীর সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা আবদুল হালিম, মহানগরী নেতা ডা. রেদওয়ানুল্লাহ শাহেদি, অ্যাডভোকেট মশিউল আলম, কবির আহমদ ও ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ।
এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেন, ব্যাপক সংখ্যক আসন নিয়ে মহাজোট সরকার ক্ষমতায় থাকলেও আমাদের এত ভয় পায় কেন? তাহলে কি তারা কারচুপির মাধ্যমে নির্বাচিত? তিনি বলেন, জনগণের প্রতি সরকারের আস্থা নেই। দেশে মানুষের কোনো অধিকার নেই। গণতন্ত্র চার দেয়ালে বন্দি। তিনি বলেন, আমরা তো গণতান্ত্রিক দল। এ দেশের সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনেই জামায়াতের বলিষ্ঠ ভূমিকা ছিল। সেই দলকে বর্তমানে রাজনৈতিক বৈধ অধিকার দেয়া হচ্ছে না। তিনি বলেন, সরকার ২০১১ সালে বিরোধী দলের সঙ্গে গণতান্ত্রিক আচরণ না করলে এ অধিকার ফিরিয়ে আনতে অতীতের মতো রাজপথে আন্দোলন গড়ে তুলবে জামায়াত। ক্ষমতা প্রয়োগ করে এ সরকার বেশিদিন ক্ষমতায় থাকতে পারবে না।
এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেন, ৩৯ বছর পর্যন্ত দেশের কোনো থানায় জামায়াত নেতাদের বিরুদ্ধে একটি জিডিও করা হয়নি। তারা কেউ দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাননি। আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে যখন তারা বৈঠক ও আন্দোলন করেছে তখন যুদ্ধাপরাধী কোথায় ছিল? এ থেকে বোঝা যায়, যুদ্ধাপরাধী কোনো বিষয় নয়, আসল কথা বিদেশিদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন। এজন্য তাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ গঠন করতে না পেরে ভুয়া অভিযোগে মামলা, মিথ্যা সাক্ষী করার পাঁয়তারা করছে। তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধীর বিচার আমরাও চাই। ক্ষমতা থাকলে তবে মরহুম শেখ মুজিবুর রহমান যে ১৯৫ জনকে চিহ্নিত করেছিলেন তাদের এনে বিচার করুন। কিন্তু যারা যুদ্ধই করেনি তাদের বিচার করার তামাশা জনগণ দেখবে না। কল্পিত কাহিনী সৃষ্টি করে বিচার করা যাবে না। তিনি বলেন, গত এক বছরে সরকার প্রমাণ করেছে তারা দেশ, জনগণ, ইসলাম ও গণতন্ত্রের দুশমন। এ দুশমন থেকে দেশ, জনগণ, ইসলাম ও গণতন্ত্রকে রক্ষায় দলমত নির্বিশেষে সরকার পতন আন্দোলন শুরু করার আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক তাসনীম আলম বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচন ছিল ডিজিটাল কারচুপি ও ষড়যন্ত্রের ফসল। আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল জলিল এবং জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদের বক্তব্যে তা প্রমাণিত হয়েছে। তিনি বলেন, সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী, মাওলানা নিজামী, সাঈদীর মতো ব্যক্তিদের আটক ও নির্যাতনের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়, তারা জনগণকে তোয়াক্কা করে না, স্বৈরাচারী কায়দায় দেশ চালাচ্ছে। তিনি দেশ ও স্বাধীনতা রক্ষায় সরকারের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন করার আহ্বান জানান। সভাপতির বক্তব্যে হামিদুর রহমান আজাদ এমপি বলেন, এ সরকার জনমত ও বিরোধী দলকে পরোয়া করে না। তারা বিদেশিদের কথায় চলে। কারণ তারা জনগণের ভোটে ক্ষমতায় আসেনি। তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধের বিচার বর্তমানে পাগলের প্রলাপ ও তামাশার বস্তু হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি

No comments:

Post a Comment