Friday 13 August 2010

ছয় মাসে ৪৫২ ছাত্র হল ছেড়েছেন



রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আবাসিক হল থেকে গত ছয় মাসে ৪৫২ জন সাধারণ ছাত্র হল ছেড়েছেন। ছাত্রলীগের চাঁদাবাজি ও ভয়ভীতি প্রদর্শনে অতিষ্ঠ হয়ে এই শিক্ষার্থীরা তাঁদের নামে বরাদ্দ সিট বাতিল করে চলে যান বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শূন্য হওয়া এসব সিট বরাদ্দ দেওয়ার জন্য দরখাস্ত আহ্বান করা হলেও এর বিপরীতে আবেদনপত্র জমা পড়ছে কম।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এম আবদুস সোবহান বলেন, শিক্ষার্থীরা কী কারণে হল ছাড়ছে, তা খতিয়ে দেখতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নির্দেশ দেওয়া হবে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলগুলোতে পুলিশ মোতায়েনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সদ্য স্থগিত হওয়া কমিটির সভাপতি আওয়াল কবির বলেন, ‘আমার জানামতে, ছাত্রলীগের কোনো নেতা-কর্মী চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত নন।’ শিক্ষার্থীদের সিট বাতিল করে চলে যাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যাঁরা সিট বাতিল করে চলে গেছেন, তাঁদের অনেকের বিরুদ্ধেই ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। তা ছাড়া হলে থাকতে ভালো না লাগলে কেউ সিট বাতিল করে চলে যেতেই পারেন। এর জন্য ছাত্রলীগ দায়ী নয়।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত ছয় মাসে বিভিন্ন হলের অন্তত ৪৫২ জন আবাসিক শিক্ষার্থী সিট বাতিল করে চলে যান। গত ৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্রলীগের ওপর শিবিরের হামলার পর থেকে এ পর্যন্ত শাহ মখদুম (এসএম) হলের ৬৮ জন, সৈয়দ আমীর আলী হলের ৩০, নবাব আবদুল লতিফ হলের ৩৩, শহীদ শামসুজ্জোহা হলের ৪৮, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের ৮৪, মাদার বখ্শ হলের ৬৯, জিয়াউর রহমান হলের ৩৭, শহীদ হবিবুর রহমান হলের ৩৮, শের-ই-বাংলা এ কে ফজলুল হক হলের ২৫ এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের অন্তত ২০ জন সাধারণ শিক্ষার্থী তাঁদের নামে বরাদ্দ থাকা সিট বাতিল করে হল ছাড়েন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সূত্র জানায়, চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কমিটি গঠিত হয়। এর পর থেকেই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের চাঁদাবাজি ও বিভিন্ন ধরনের হুমকিতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা জিম্মি হয়ে পড়েন। তবে গত ৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্রলীগের সঙ্গে শিবিরের সংঘর্ষে ছাত্রলীগের কর্মী ফারুক হোসেন নিহত হওয়ার পর শিবিরের নেতা-কর্মীরা ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে যান। এরপর ছাত্রলীগের দৌরাত্ম্য আরও বেড়ে যায়।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে মারধরের পাশাপাশি শিবিরের কর্মী আখ্যা দিয়ে কিংবা ছাত্রলীগের কর্মী ফারুক হত্যায় জড়িত বলে পুলিশে দেওয়ার ভয় দেখানো হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষার্থীর অভিযোগ, তিনি মাদার বখ্শ হলের আবাসিক ছাত্র ছিলেন। সম্প্রতি ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তাঁর কাছ থেকে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে তাঁকে মারধর করা হয়। হলে থাকা নিরাপদ নয় ভেবে সিট বাতিল করে তিনি ক্যাম্পাসের বাইরে একটি বেসরকারি ছাত্রাবাসে থাকছেন।
এস এম হলের আবাসিক ছাত্র ছিলেন এমন একজনের সঙ্গে কথা হয়। তিনি জানান, হলে থাকার সময় তিনি কোনো ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। সম্প্রতি ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তাঁকে ‘ছাত্রশিবিরের কর্মী’ আখ্যা দিয়ে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে না পারায় তিনি সিট বাতিল করে হল ছেড়ে দিয়েছেন।
শের-ই-বাংলা এ কে ফজলুল হক হলের এক আবাসিক শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন, ছাত্রলীগের কর্মীরা ভয়ভীতি দেখিয়ে সম্প্রতি তাঁর কাছ থেকে মোটা অঙ্কের চাঁদা নিয়েছে। বাধ্য হয়ে তিনি সিট বাতিল করেছেন।
আরও অনেক শিক্ষার্থী প্রথম আলোর কাছে এ ধরনের অভিযোগ করেছেন। তাঁদের নিরাপত্তার কথা ভেবে নাম প্রকাশ করা হলো না।
অনেক সাধারণ শিক্ষার্থী জানান, শিবির ‘ইয়ানত’-এর নামে চাঁদা আদায় করত। আর ছাত্রলীগ বিভিন্ন অজুহাতে চাঁদা আদায় করছে। ছাত্রলীগের চাঁদাবাজি থেকে সাংবাদিক কিংবা সাংস্কৃতিক কর্মীরাও রেহাই পাচ্ছেন না। জিয়াউর রহমান হলের আবাসিক ছাত্র ও একটি জাতীয় দৈনিকের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি অভিযোগ করেন, ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন কর্মী সম্প্রতি তাঁর কাছ থেকে ২০০ টাকা চাঁদা নেন। বিষয়টি হল প্রশাসন ও ছাত্রলীগের নেতাদের জানালেও এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। পরে সাংবাদিকদের জানালে শেষ পর্যন্ত ওই টাকা ফেরত দেওয়া হয়।
শামসুজ্জোহা হলের আবাসিক ছাত্র ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি ইব্রাহিম হোসেনের অভিযোগ, ছাত্রলীগের কিছু কর্মীর চাঁদা দাবিতে তিনি অতিষ্ঠ। পাশাপাশি বিভিন্ন সময়ে ছাত্রলীগের মিছিল-সমাবেশেও অংশ নেওয়ার জন্য তাঁকে চাপ দেওয়া হয়।
এদিকে গত ৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্রলীগ ও শিবিরের সংঘর্ষের পর বিভিন্ন হলের অনেকের কক্ষ তালাবদ্ধ ছিল। কিছু কক্ষ শিবিরের নেতা-কর্মীর হলেও অধিকাংশই ছিল সাধারণ শিক্ষার্থীদের। এসব কক্ষের তালা ভেঙে কম্পিউটার, কাপড়চোপড় ও বইখাতা লুট করা হয়। এসএম হলের আবাসিক শিক্ষার্থী সেলিম জানান, ছাত্রলীগ-শিবিরের সংঘর্ষের আগে তিনি বাড়ি চলে যান। সংঘর্ষের কয়েক দিন পরে হলে ফিরে দেখেন তাঁর কম্পিউটারসহ অনেক কিছু খোয়া গেছে। পরে জানতে পারেন, একটি ছাত্র সংগঠনের কর্মীরা তালা ভেঙে এসব নিয়ে গেছেন। বিষয়টি হলের প্রাধ্যক্ষকে জানালে তিনি কোনো ব্যবস্থা নিতে অসহায়তা প্রকাশ করেন।
বিভিন্ন হল সূত্র জানায়, শিক্ষার্থীরা সিট বাতিল করে চলে যাওয়ায় শূন্য সিটগুলো নতুনভাবে বরাদ্দের উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু এতে শিক্ষার্থীদের সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। শামসুজ্জোহা হলে দুই মাস আগে ১২০টি শূন্য সিটের বিপরীতে দরখাস্ত আহ্বান করা হয়। এতে আবেদনপত্র জমা পড়ে মাত্র ৬০টি। সবাইকে সিট দেওয়া হলেও হলে উঠেছেন ৫৪ জন। অন্য হলগুলোতে একই অবস্থা বলে জানা গেছে।
শের-ই-বাংলা হলের প্রাধ্যক্ষ সুভাষ চন্দ্র শীলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাধারণ শিক্ষার্থীদের হল ছেড়ে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন। তিনি জানান, কয়েকজন শিক্ষার্থী সিট বাতিল করে চলে গেছেন। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের চাঁদাবাজির কারণে শিক্ষার্থীরা চলে গেছেন কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে হল ছেড়েছেন।’
শামসুজ্জোহা হলের প্রাধ্যক্ষ মর্ত্তুজা খালেদ সাধারণ শিক্ষার্থীদের হল ছেড়ে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘ব্যক্তিগত নাকি অন্য কোনো কারণে হল ছেড়েছেন তা ওই শিক্ষার্থীরাই ভালো বলতে পারবেন।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা জানান, শিবিরের সশস্ত্র হামলায় ছাত্রলীগের কর্মী ফারুক নিহত হওয়ার পর ছাত্রলীগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যাপক সমর্থন পেয়েছিল। কিন্তু চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপতৎপরতার কারণে তা এরই মধ্যে ম্লান হয়ে গেছে। বর্তমান পরিস্থিতির জন্য শিক্ষার্থীরা লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতিসহ বিশ্ববিদ্যালয় ও হল প্রশাসনের ব্যর্থতাকে দায়ী করেন। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা, বিশ্ববিদ্যালয় ও হল প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা ও সংগীত বিভাগের সভাপতি মলয় ভৌমিক বলেন, ছাত্রলীগের চাঁদাবাজি ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর অত্যাচারের ঘটনা দুঃখজনক। এটা চলতে থাকলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সমর্থন পেয়ে মৌলবাদী সংগঠন ছাত্রশিবির লাভবান হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর চৌধুরী মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, চাঁদাবাজি কিংবা ভয়ভীতি দেখানো বা লুটপাটের ঘটনার সঙ্গে কারও জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
http://www.prothom-alo.com/detail/date/2010-08-14/news/86325

Monday 2 August 2010

গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে প্রশ্ন

Mon, Aug 2nd, 2010 9:58 am BdST

ডেভিড বার্গম্যান

বিশেষ প্রতিবেদন সম্পাদক

ঢাকা, আগস্ট ০২ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- একাত্তরে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের মামলায় মতিউর রহমান নিজামীসহ জামায়াতে ইসলামীর চার শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির সিদ্ধান্ত যথাযথ আইনগত ভিত্তি ছাড়াই হয়েছে বলে মনে করছেন একজন আইন বিশেষজ্ঞ।

অপরাধ বিষয়ে দেশের শীর্ষ আইনজ্ঞ আনিসুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আইন অনুযায়ী এই ট্রাইব্যুনাল 'অভিযোগ গঠনের পরই' কেবল গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করতে পারে।

জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ এবং দুই সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল মুহাম্মাদ কামারুজ্জামান ও কাদের মোল্লাকে সোমবার ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই চার জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে এখনো কোনো অভিযোগ গঠন করে নি।

১৯৭১ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আটক দেখানের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে করা এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৬ জুলাই এ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।

বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় সরকার পক্ষের প্রধান কৌঁসুলি আনিসুল হকের দেওয়া আইনের এ ব্যাখ্যা যদি সঠিক হয়, তাহলে এই ট্রাইব্যুনাল প্রথম শুনানিতেই হয়তো এক গুরুতর ভুল করেছে।

এছাড়া যে আইনের আওতায় চার জামায়াত নেতার বিচার হচ্ছে, তা ট্রাইব্যুনালের কোনো সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে ট্রাইব্যুনালের বাইরে অন্য কোনো আদালতে আপিলের সুযোগ দেয় না।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান কৌঁসুলি গোলাম আরিফ টিপুর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি।

গত ২৬ জুলাই ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. নিজামুল হক এক আদেশে বলেন, "কার্যকর ও যথাযথ তদন্তের স্বার্থে এই চারজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা উচিত।"

শুনানিতে প্রধান কৌঁসুলি গোলাম আরিফ টিপু ট্রাইব্যুনালের কার্যপ্রণালী বিধিমালার বিধি ৯ উদ্ধৃত করেন, যাতে বলা হয়েছে- কার্যকর ও সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে, তদন্তকারী কর্মকর্তা ট্রাইব্যুনালের সন্তুষ্টি সাপেক্ষে তদন্তের যে কোনো পর্যায়ে কোনো ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করার জন্য প্রসিকিউটরের মাধ্যমে ট্রাইব্যুনালের কাছ থেকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা সংগ্রহ করতে পারবেন।

তবে আনিসুল হকের যুক্তি হচ্ছে, ১৯৭৩ সালের ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস ট্রাইব্যুনাল অ্যাক্ট এর ধারা ১১(৫) এর আলোকে এই বিধি পড়া উচিত।

তিনি জানান, ১৯৭৩ সালের ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস ট্রাইব্যুনাল অ্যাক্ট এর ধারা ১১(৫) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির ক্ষমতা দিয়েছে।

এই ধারায় বলা হয়েছে, ট্রাইব্যুনালের কেবলমাত্র 'ধারা ৩ এ বর্ণিত অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তির' বিরুদ্ধেই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির ক্ষমতা রয়েছে।

ধারা ৩ এ মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ, গণহত্যা এবং যুদ্ধাপরাধ রয়েছে।

আনিসুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ গঠন করার পরই কেবল এসব অপরাধের ক্ষেত্রে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির ক্ষমতা প্রাপ্ত হবে।"

জ্যেষ্ঠ এই আইনজীবী আরো বলেন, কার্যপ্রণালী বিধিমালার বিধি ৯ ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস ট্রাইব্যুনাল অ্যাক্টকে ছাড়িয়ে যেতে পারে না। এই বিধি ট্রাইব্যুনালের ক্ষমতার কার্যপরিধি পরিবর্তনে ব্যবহৃত হতে পারে না।

"বিধিমালা অ্যাক্টের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ হতে পারে না। অ্যাক্ট অনুযায়ী বিধিমালা প্রণীত হয়, এর অন্যথা হতে পারে না", বলেন তিনি।

আনিসুল হক উল্লেখ করেন যে, অ্যাক্টের ধারা ২২ ট্রাইব্যুনালকে তার নিজস্ব কার্যপ্রণালী নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা দিয়েছে। অর্থাৎ, নিজস্ব কার্যপ্রণালী বিধিমালা প্রকাশের ক্ষমতা, তবে তা হবে অবশ্যই এই আইনের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/ডিবি/টিএ/জেবি/এইচএ/০৯৫০ ঘ.

http://www.bdnews24.com/bangla/details.php?cid=3&id=132901&hb=5

--------------------------------------------------

জামায়াত নেতাদের ‘আইন অনুযায়ী’ গ্রেপ্তার দেখানো হয়নি: আনিসুল হক

Mon 2 Aug 2010 7:53 PM BdST



rtnn ঢাকা, ০২ আগস্ট (আরটিএনএন ডটনেট)-- জামায়াতের চার শীর্ষ নেতাকে মানবতা বিরোধী অপরাধের অভিযোগে ‘আইন অনুযায়ী’ গ্রেপ্তার দেখানো হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় সরকার পক্ষের প্রধান কৌঁসুলি ও সিনিয়র আইনজীবী আনিসুল হক। বলেছেন, ‘আইন অনুযায়ী অভিযোগ গঠনের পরই কেবল এই ট্রাইব্যুনাল গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করতে পারে।’

আজ সোমবার প্রথমবারের মতো জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ এবং দুই সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল মুহাম্মাদ কামারুজ্জামান ও কাদের মোল্লাকে মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচারে স্থাপিত বিশেষ ট্রাইব্যুনালে হাজির করার পর নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের কাছে এত প্রতিক্রিয়ায় আনিসুল হক এসব কথা বলেন।

তিনি জানান, আন্তর্জাতিক অপরাধ এ্যাক্ট ৭৩ অনুযায়ী কাউকে গ্রেপ্তার দেখানোর আগে অভিযোগ গঠন করতে হয়।

জামায়াতের শীর্ষ চার নেতার গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে তা করা হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ কারণে মানবতা বিরোধী অপরাধে তাদের (জামায়াতের চার নেতা) গ্রেপ্তার দেখানো সম্পূর্ণ অবৈধ।

তিনি বলেন, জামায়াতের শীর্ষ চার নেতাকে হত্যা মামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগে গ্রেপ্তার দেখানো বৈধ হলেও ট্রাইব্যুনাল সেকশন ১১(৫) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী তাদের গ্রেপ্তার দেখানো ঠিক হয়নি।

ঐ অনুচ্ছেদের ৩ নং ধারায় এ বর্ণিত অপরাধে (মানতার বিরুদ্ধে অপরাধ, গণহত্যা এবং যুদ্ধাপরাধ বিষয়ক অভিযোগ) অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধেই কেবলমাত্র ট্রাইব্যুনালের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির ক্ষমতা রয়েছে।

ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ গঠন করার পরই কেবল এসব অপরাধের ক্ষেত্রে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির ক্ষমতা প্রাপ্ত হবে বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন, আইনের বিধান ঠিক রেখেই বিচার হওয়া উচিত।

প্রত্যেক বাঙালিই যুদ্ধাপরাধের বিচার চায় দাবি করে তিনি বলেন, বিচারের নামে প্রহসন কেউ দেখতে চায় না।

আরটিএনএন ডটনেট/এমই/এমএম_১৯৫২ ঘ.

http://rtnn.net/details.php?id=26519&p=1&s=3

Sunday 1 August 2010

আমার দেশ-এর ছাপাখানা খুলে দেয়া হয়েছে



স্টাফ রিপোর্টার
অবশেষে দুই মাস বন্ধ রাখার পর দৈনিক আমার দেশ-এর ছাপাখানা গতরাতে খুলে দিয়েছে পুলিশ। হাইকোর্ট বিভাগ ও আপিল বিভাগের আদেশের সার্টিফাইট কপি পাওয়ার পরও দৈনিক আমার দেশ-এর ছাপাখানা খুলে না দেয়ায় রোববার আদালত অবমাননার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। ঢাকার জেলা প্রশাসক ও তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ভারপ্রপ্ত কর্মকর্তাকে দায়ী করে দৈনিক আমার দেশ-এর পক্ষ থেকে বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা ও বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ সমন্বয়ে গঠিত ডিভিশন বেঞ্চে এই অভিযোগ দায়ের করা হয়। আদালত অবমাননার অভিযোগটির বিষয়ে আজ শুনানি হওয়ার কথা।
এ অবস্থায় গতকাল সন্ধ্যায় আকস্মিকভাবে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা থেকে আমার দেশ অফিসকে প্রেস খুলে দেয়ার কথা জানালে পত্রিকার সাংবাদিক-কর্মচারীরা খুশি হয়ে থানায় যান। এর পর পুলিশ সেখানে গিয়ে সিলগালা খুলে দেয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শিল্পাঞ্চল থানার এসআই শাহ মোহাম্মদ আহাদ হোসেন রাত ৯টায় থানায় রাখা চাবি দিয়ে তালা খুলে দেয়। মুহূর্তেই আনন্দ ধ্বনি দিয়ে আমার দেশ-এর ছাপাখানায় প্রবেশ করেন এবং আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করেন। উল্লেখ্য, আইনজীবীদের সঙ্গে নিয়ে আমার দেশ-এর একটি প্রতিনিধিদল তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় গিয়ে প্রেস খুলে দেয়ার অনুরোধ করেন। কিন্তু থানার সেকেন্ড অফিসার কালাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ওসি ওমর ফারুক থানায় না আসায় তারা প্রেস খুলে দেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না। যে মামলার ওপর ভিত্তি করে প্রশাসন এ ব্যবস্থা নিয়েছে সে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আহাদ হোসেনও জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে থানায় চিঠি পৌঁছানোর কথা স্বীকার করেন। আমার দেশ-এর প্রতিনিধিদলের উপস্থিতিতে সেকেন্ড অফিসার থানার ওসির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাননি বলে জানান।
গত ১ জুন রাতে একটি প্রতারণার মামলার জের ধরে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা পুলিশ কোনো ধরনের বৈধ কাগজপত্র প্রদর্শন ছাড়াই জোর করে আমার দেশ-এর ছাপাখানা বন্ধ করে দেয়। পরে ভোররাতে পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে গ্রেফতার ও পরদিন আমার দেশ-এর ডিক্লারেশন বাতিলের চিঠি পত্রিকা কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে দেয়া হয়। মাহমুদুর রহমানকে ছাপাখানার রক্ষক হিসেবে সরকারের বৈধ নিয়োগ থাকা ও সেটা ঠিক রেখেই পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিলের অজুহাতে সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে জোরপূর্বক পুলিশ ছাপাখানা বন্ধ রাখে। ১০ জুন হাইকোর্ট আমার দেশ-এর ডিক্লারেশন বাতিল ও মাহমুদুর রহমানকে প্রকাশক হিসেবে নিয়োগ না দেয়ার চিঠি দু’টির কার্যকারিতা তিন মাসের জন্য স্থগিত করে দেন। তখনও পুলিশ নানা অজুহাতে ছাপাখানা খুলে দেয়া থেকে বিরত থাকে। বাধ্য হয়ে অন্য ছাপাখানা থেকে তখন পত্রিকা প্রকাশ করতে হয়। হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী এ জাতীয় আদেশের ক্ষেত্রে আইনজীবী সার্টিফাইড কপি গ্রহণযোগ্য হলেও পুলিশ সেটাকে আমলে নেয়নি। পরবর্তীতে হাইকোর্ট থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সার্টিফাইড কপি থানায় পৌঁছালে তখনও জেলা প্রশাসনের নির্দেশ ছাড়া প্রেসের সিলগালা খোলা যাবে না বলে টালবাহানা করে। এ অবস্থায় ১৫ জুন চেম্বার জজ ৪ সপ্তাহের জন্য হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করলে পত্রিকার ছাপা আবারও বিঘ্নিত হয় এবং ছাপাখানা খুলে দেয়া থেকে পুলিশ বিরত থাকে। গত ১৮ জুলাই আপিল বিভাগের রায়ে আমার দেশ পুনরায় প্রকাশিত হতে শুরু করে। তখনও জেলা প্রশাসন ও পুলিশ আইনজীবীর সার্টিফাইড কপি দেখিয়ে ছাপাখানা খুলে দিতে রাজি হয়নি। গত ২৭ জুলাই আপিল বিভাগের আদেশ চূড়ান্ত হওয়ার পরদিন ২৮ তারিখে সার্টিফাইড কপি জেলা প্রশাসক ও তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় পৌঁছে। কিন্তু এরপরও পুলিশ প্রশাসন আমার দেশ-এর ছাপাখানা খুলে দেয়নি। সর্বশেষ ২৯ জুলাই জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের রায় অনুযায়ী আমার দেশ-এর ছাপাখানা খুলে দেয়ার ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট পুলিশ প্রশাসনকে জানানোর পরও পুলিশ আমার দেশ-এর ছাপাখানা খুলে দেয়নি। এরই মধ্যে আমার দেশ-এর পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ প্রশাসনের কাছে ছাপাখানা খুলে দেয়ার জন্য উকিল নোটিশও পাঠানো হয়। কিন্তু কিছুতেই তারা কর্ণপাত করেনি। এতদিন ছাপাখানা পুলিশ অন্যায়ভাবে জোর করে বন্ধ রাখার ফলে লাখ লাখ পাঠকের চাহিদা থাকা সত্ত্বেও তাদের কাছে আমার দেশ পৌঁছানো সম্ভব। কর্তৃপক্ষ বিপুল আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।

http://www.amardeshonline.com/pages/details/2010/08/02/37006