Wednesday 29 December 2010

বলির পাঁঠা হয়েছে বেসরকারি ৫ ল্যান্ডফোন কোম্পানি : বিদায়ী বছরে টেলিকম খাতে অনিশ্চয়তার মাত্রা ছিল বেশি

জিয়াউদ্দিন সাইমুম

২০১০ সালে বাংলাদেশের টেলিকম ইতিহাসের তিনটি ঘটনা বছর ধরেই আলোচিত ছিল। এগুলো হচ্ছে দেশীয় বিনিয়োগে গড়ে ওঠা ৫টি পাবলিক সুইচড টেলিকম নেটওয়ার্ক (পিএসটিএন) বা ল্যান্ডফোন কোম্পানিকে বলির পাঁঠা বানানো। কর ফাঁকি দিয়ে এয়ারটেলের ওয়ারিদ টেলিকম কেনা এবং বহুল বিতর্কিত টেলিকম আইন চালু। আর তিনটি ঘটনার যোগফল হিসেবে দেশের টেলিকম খাতে অনিশ্চয়তার মাত্রা ছিল অনেক বেশি।
বিশেষত র্যাংকস টেল, পিপলস টেল, ওয়ানটেল, ওয়ার্ল্ডটেল ও ঢাকা ফোনকে অবৈধ কল টার্মিনেশনের অভিযোগে বন্ধ ও লাইসেন্স বাতিল করার বিষয়টি ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিও মেনে নিতে পারেনি। কারণ, লাইসেন্স বাতিল হওয়া এই ৫টি ল্যান্ডফোন কোম্পানির গ্রাহক সংখ্যা দেশের মোট মোবাইল গ্রাহক সংখ্যার মাত্র এক শতাংশ। বাকি ৯৯ শতাংশ গ্রাহক দেশি-বিদেশি ৬টি মোবাইল অপারেটরের। আবার এই ৫টি কোম্পানি বন্ধ হওয়ায় এখন বেসরকারি ল্যান্ডফোন বলতে দেশে আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। পুরো টেলিকম সেক্টর বিদেশিদের হাতে চলে গেছে।
অন্যদিকে পানির দামে ওয়ারিদ টেলিকমকে ভারতী এয়ারটেল কিভাবে কিনেছে তা নিয়ে বছরজুড়ে আলোচনা হলেও সরকার এয়ারটেলের কর ফাঁকির বিষয়টি তদন্ত করে দেখেনি। বরং আপিলের বিধান বাতিল করে কঠোর টেলিকম আইন পাস করেছে। পাশাপাশি এই আইনের আওতায় বিটিআরসি থেকে মূল ক্ষমতা মন্ত্রণালয়ে নেয়া হয়। এতে টেলিকম সেক্টর সম্পর্কে যে কোনো সিদ্ধান্ত আমলাতান্ত্রিক জটিলতার ফাঁদে পড়ে যায়। কমে যায় বিদেশি বিনিয়োগ।
বলির পাঁঠা পিএসটিএন : ভিওআইপির অবৈধ ব্যবহারের অভিযোগে চলতি বছরের মার্চ মাসে ৫টি পিএসটিএন অপারেটরের সুইচরুম বন্ধ এবং গত মে মাসে লাইসেন্স বাতিল করে দেয় বিটিআরসি। কিন্তু এ ৫টি ল্যান্ডফোন কোম্পানি বন্ধ হওয়ার পরও অবৈধ পথে ভিওআইপির ব্যবহার থেমে থাকেনি। বর্তমানে দেশে বৈধপথে আন্তর্জাতিক কল আদান-প্রদান দৈনিক গড়ে চার কোটি হলেও প্রায় সমপরিমাণ আন্তর্জাতিক কল আদান-প্রদান হয় অবৈধ পথে। কিন্তু অবৈধ কল আদান-প্রদানের অভিযোগে একমাত্র বলির পাঁঠা বানানো হয় ৫টি পিএসটিএন কোম্পানিকে। এতে অনিশ্চতায় পড়ে যায় এ খাতের আড়াই হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ। এর মধ্যে ব্যাংক ও সিন্ডিকেট ঋণদাতাদের কাছ থেকে দেড় হাজার কোটি টাকা ঋণ নেয়া হয়। অন্যদিকে বন্ধ হওয়ার কারণে চাকরি হারান প্রায় ৫ হাজার পিএসটিএন কর্মকর্তা-কর্মচারী।
উল্লেখ্য, বিটিআরসি অবৈধ ভিওআইপির অভিযোগে ১৫ মার্চ ঢাকাফোন ১৭ মার্চ ওয়ার্ল্ড টেল, ১৯ মার্চ র্যাংকস টেল, ২১ মার্চ পিপলস টেল এবং ২৩ মার্চ ন্যাশনাল ফোনের সব কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় বিটিআরসি ও র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-র্যাব। এতে কয়েক লাখ গ্রাহক ভোগান্তিতে পড়েন। বিটিআরসির হিসাবে র্যাংকস টেলের গ্রাহক সংখ্যা তিন লাখ ৭৮২, পিপলসটেলের ১ লাখ ৬১ হাজার ৬৩, ন্যাশনাল ফোনের ১ লাখ ৩৭ হাজার, ঢাকা ফোনের ৭৭ হাজার ৭৬৫ জন এবং ওয়ার্ল্ডটেলের ১৪ হাজার ২৬১ জন।
বিনিয়োগ স্থবির : বিনিয়োগের দিক থেকে ২০১০ সালে দেশের মোবাইল সেক্টর মোটেও বেগবান হতে পারেনি। সংশোধিত আইনের মারপ্যাঁচে পড়ে গত তিন মাসে মোবাইলের নতুন কোনো প্যাকেজই অনুমোদন পায়নি। এ কারণে এই খাতে বিনিয়োগও তেমন বাড়েনি। ব্যাখ্যাহীন কারণে কালক্ষেপণ করায় থ্রিজি মোবাইল ফোন, সরকারি প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে সস্তায় ল্যাপটপ আর ডুয়েল সিম মোবাইল সেট ঘোষণা মাফিক পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে পুরনো চার মোবাইল অপারেটরের লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হতে চললেও তা নবায়নের বিষয়টি পরিষ্কার হয়নি। এ কারণে এসব মোবাইল অপারেটর বাজারে এয়ারটেল থাকার পরও বিনিয়োগ বাড়ানো নিয়ে দোটানায় রয়েছে। অথচ এয়ারটেল আসার কারণে ২০১০ সালেই দেশের টেলিকম খাতে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ হওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টির কথা। কিন্তু তা হয়নি। বিনিয়োগ কমে যাওয়ার আরেকটি কারণ হিসেবে বলা যায়, চারটি মোবাইল অপারেটর এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে জানতেই পারেনি তাদের লাইসেন্স নবায়ন প্রক্রিয়া কি হচ্ছে।
ওয়াইম্যাক্সের লাইসেন্স পাওয়া কোম্পানিগুলো এখনও মাথা উঁচু করতে পারছে না। ঢিমেতালে এবং খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে। চলতি বছরই আইপি টেলিফোনের লাইসেন্স দেয়া হয়েছে। তবে সংশ্লিষ্ট অপারেটর মালিকরা বলছেন, তাদের হাত-পা বেঁধে ব্যবসা করতে দেয়া হয়েছে। আইপি টেলিফোন সেটের ওপর ৫০ শতাংশের বেশি করারোপ করায় এ ব্যবসা জমে উঠতে পারছে না। কলসেন্টারগুলোও এগুতে পারছে না। অবৈধ কল টার্মিনেশনও (ভিওআইপি) বন্ধ হচ্ছে না। অভিযোগ রয়েছে সরকারি দলের ক্ষমতাবান কয়েকজন এখন ভিওআইপি ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছে। সহযোগী হিসেবে আছেন বিটিআরসি এবং বিটিসিএলের কিছু লোক। এসব অবৈধ ভিওআইপি কল শনাক্ত করার সর্বাধুনিক প্রযুক্তি হাতে থাকার পরও সরকারি আশীর্বাদপুষ্ট এসব রুই-কাতলাকে মোটেও ধরা যাচ্ছে না।
২০১০ সালে এয়ারটেল নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের কাজে ঠিক কত পরিমাণ বিনিয়োগ করেছে তার সঠিক চিত্র পাওয়া যায় না। কোম্পানিটির প্রতি সরকারের আনুকূল্যের কারণে টেলিকম খাতের বিষেশজ্ঞরা এয়ারটেল নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হন না। তবে অন্য অপারেটররা চলতি বছর টেলিখাতে উল্লেখযোগ্য কোনো বিনিয়োগ করেনি। প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, ২০০৮ সালের তুলনায় ২০০৯ সালে এই খাতে ৬১ শতাংশ বিনিয়োগ কমেছে। ২০০৮ সালে এই খাতে ৬৪ কোটি ১৩ লাখ ৯০ হাজার ডলার বিনিয়োগ হলেও গত বছর তা নেমে আসে ২৫ কোটি ১ লাখ ৪০ হাজার ডলারে। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, টেলিকম খাতে বিনিয়োগ পরিস্থিতি যেভাবে চলছে তাতে ২০১১ সালে বিদেশি বিনিয়োগ বা পুনর্বিনিয়োগ খুব একটা বেশি নাও হতে পারে।
টেলিকম আইনে পরিবর্তন : টেলিকম আইনে পরিবর্তন আনার মধ্য দিয়ে দেশের আমলারা টেলিকম সেক্টরের ওপর খবরদারির সুযোগ পেয়ে যায়, বিটিআরসির ক্ষমতা কমে যায়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত দু’বছরে সরকার যে পৌনে দুইশ’ আইন পাস করেছে তার মধ্যে এই আইনটি সবচেয়ে সমালোচিত। আইনে ৩শ’ কোটি টাকা জরিমানার সঙ্গে ১০ বছরের জেল, যে কোনো সময় এককভাবে যে কোনো অপারেটরের লাইসেন্স বাতিল বা লাইসেন্সের শর্ত পরিবর্তনের ক্ষমতা পেয়েছে সরকার। ট্যারিফ ও অন্যান্য চার্জও সরকার অনুমোদন দেবে। আবার সরকারের কোনো সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিলও করা যাবে না। গত ১৯ জুলাই জাতীয় সংসদে আইনটি পাস হয়।
আইনের কয়েকটি ধারায় বিভিন্ন অপরাধে অপারেটর কর্মকর্তাদের জেল-জরিমানার বিধানও রয়েছে। ব্যক্তিপর্যায়ে এই জরিমানা ১০০ কোটি টাকা এবং ৫ বছরের জেল। কিন্তু কোন পর্যায়ের কর্মী বা কর্মকর্তা অভিযুক্ত হবেন, সে বিষয়ে বলা নেই। এতে সামান্য অপরাধেও বিদেশি মালিক, পরিচালক, ব্যবস্থাপক, অফিসারসহ সব কর্মীকেই অপরাধী করার সুযোগ রয়েছে।
ডিজিটাল কনসেপ্ট নিয়ে বেশ মাতামাতি করলেও মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর টেলিকম খাতে নির্দিষ্ট কোনো লক্ষ্যে স্থির থাকতে পারেনি বিটিআরসিও। তাদের পেছন থেকে টেনে রাখা হচ্ছে। এ কারণে তাদের কোনো কাজেই ধারাবাহিকতা বজায় থাকছে না। তারা যে ফরমায়েশি কাজে অভ্যস্ত হয়ে উঠছে, তা তাদের কার্যক্রম দেখলে বোঝা যায়। শুরুতে বিটিআরসি আন্তর্জাতিক গেটওয়ের (আইজিডব্লিউ) সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা নেয়। কিন্তু কাজ শেষ না করে অগ্রাধিকার তালিকা বদলে অবৈধ কল টার্মিনেশনের অভিযোগে পিএসটিএন লাইসেন্স বাতিল করে। অথচ একই অভিযোগে মোবাইল অপারেটররা স্রেফ জরিমানা দিয়েই পার পেয়ে যায়। বিটিআরসি থ্রি-জি লাইসেন্স বিষয়েও বেশ মাতামাতি করেছিল। ওটাতে ভাটা পড়তে বেশি সময় লাগেনি। এখন তারা তাদের অগ্রাধিকার পাল্টিয়ে ভিওআইপির লাইসেন্স উন্মুক্ত করা নিয়ে দৌড়ঝাঁপ শুরু করে দিয়েছে।
গ্রাহক ঠিকই বেড়েছে : তবে মোবাইল গ্রাহকসংখ্যা বাড়ছেই। ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ দেশে মোবাইল গ্রাহকসংখ্যা ছয় কোটি ৬৬ লাখ ২১ হাজার বলে মোবাইল অপারেটররা জানিয়েছেন। তারা এটাও দাবি করেছেন, সিম ট্যাক্স না থাকলে গ্রাহক আরও বাড়ত। তবে বিটিআরসি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্যে দেখানো হয়েছে, গত অক্টোবর মাসে দেশে মোবাইল গ্রাহক ছিল ছয় কোটি ৫৫ লাখ ৬৩ হাজার।
প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, গত নভেম্বরে গ্রামীণফোনের গ্রাহক বেড়েছে তিন লাখ ৫৬ হাজার। সব মিলিয়ে তাদের গ্রাহক দাঁড়িয়েছে দুই কোটি ৮৮ লাখ ৪৩ হাজার। অন্যদিকে দ্বিতীয় সেরা অপারেটর বাংলালিংকের গ্রাহকসংখ্যা এক কোটি ৮৮ লাখ ৪৩ হাজার, রবির এক কোটি ২০ লাখ ৫৯ হাজার, এয়ারটেলের ৩৭ লাখ ৯৭ হাজার ও সিটিসেলের ১৮ লাখ ৭৩ হাজার। তবে এই সময়ে টেলিটকের গ্রাহক কমেছে ২০ হাজার। তাদের মোট গ্রাহক ১২ লাখের সামান্য বেশি।
উল্লেখ্য, গত বছর নভেম্বরে মোবাইল ফোন গ্রাহক ছিল সাড়ে পাঁচ কোটি। আর ২০০৮ সালের নভেম্বরে সংখ্যাটি ছিল চার কোটি ৩৯ লাখ এবং ২০০৭ সালের নভেম্বরে সংখ্যাটি ছিল তিন কোটি ৩১ লাখ।
সস্তায় ল্যাপটপ ও মোবাইল সেট : ২০০৯ সালের এপ্রিল-মে থেকে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী এবং মন্ত্রণালয় জোর দিয়ে বলেছিল, ‘ছয় মাসের মধ্যে নিজস্ব ব্র্যান্ডের ল্যাপটপ ও মোবাইল সেট উত্পাদন শুরু হবে।’ অথচ সব কারিগরি সহায়তা দেয়ার পাশাপাশি যন্ত্রাংশ সরবরাহের জন্য গত ৬ মে মালয়েশিয়ার টিএফটি টেকনোলজি গ্রুপের সঙ্গে চুক্তি করে বাংলাদেশ টেলিফোন শিল্প সংস্থা (টেশিস)। কিন্তু তারপর নানা আমলাতান্ত্রিক মারপ্যাঁচে আটকে যায় এ চুক্তি।
টেলিটক-বিটিসিএল এগুতে পারছে না : আমলাতান্ত্রিকতার বাধা ডিঙাতে পারেনি দেশের একমাত্র সরকারি মোবাইল অপারেটর টেলিটক। অন্যদিকে সরকারি টেলি সেবা কোম্পানি বিটিসিএলও আশার আলো দেখাতে পারেনি। সরকার ডিসেম্বরের মধ্যে সরকারি ল্যান্ডফোন কোম্পানি বিটিসিএলকে শেয়ারবাজারে যেতে বলেছে। কিন্তু তারা বলছে, যে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে বিটিসিএল চলছে তাতে এটি অসম্ভব। আড়াই বছর আগে সরকারের এই সংস্থাটিকে কোম্পানি করা হয়েছে। এখনও তার অর্গানোগ্রামই ঠিক হয়নি। সরকারের ক্যাডার কর্মকর্তাদের পদ থাকবে কি থাকবে না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আদালত পর্যন্ত যেতে হয়েছে। বিটিসিএলের অবস্থা এমন পর্যায়ে গেছে যে এফডিআর ভেঙে কর্মীদের বেতন দিতে হচ্ছে। টেলিটকের সেবার মান নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়েছে।
আলোচনায় এয়ারটেলের কর ফাঁকি : বাংলাদেশের টেলিকম বাজার দখল করার ভারতীয় নীলনকশার অংশ হিসেবে গত ২০ ডিসেম্বর এয়ারটেলের যাত্রা শুরু হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, কর ফাঁকির মাধ্যমে এবং ভারতীয় আকাঙ্ক্ষার অংশ হিসেবে গত ৪ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে ওয়ারিদের ৭০ শতাংশ শেয়ার মাত্র এক লাখ ডলারে কিনে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছিল ভারতী এয়ারটেল। তবে একটি শক্তিশালী মোবাইল অপারেটর বাংলাদেশের টেলিকম বাজারে আসার কারণে প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে টেলিকম খাতে বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়ার কথা থাকলেও এয়ারটেল বাদে বাকি অপারেটররা পরিস্থিতি বুঝে ওঠার আগে বিনিয়োগে আগ্রহী হতে চাইছে না।
বাজারে আসার পর থেকে এয়ারটেল এদেশের টেলিকম বাজার দখলের পাশাপাশি ভারতকে টেলিট্রানজিট পাইয়ে দিতে উঠেপড়ে লাগে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণের সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ভারত ট্রানজিটের মতোই কৌশলে এই টেলি-ট্রানজিট আদায় করে নিচ্ছে। এর মাধ্যমে উত্তর-পূর্ব ভারতে টেলিযোগাযোগ, ইন্টারনেট ইত্যাদি সস্তা হবে ও বিনিময়ে বাংলাদেশ কিছু চার্জ বা ভাড়া পাবে মাত্র।
মোবাইল অপারেটর একটেলে (বর্তমানের রবি) একে খান গ্রুপের ৩০ শতাংশ শেয়ার ছিল। সেই শেয়ার ৩৫০ মিলিয়ন ডলার দিয়ে কিনে নেয় জাপানের এনটিটি ডকুমো। ওই শেয়ার বিক্রি থেকে তখন সরকার প্রায় ১৩২ কোটি টাকা ফি পেয়েছিল। এর আগে সিটিসেলে প্যাসিফিক টেলিকমের শেয়ার সিং টেলের কাছে হস্তান্তর থেকে সরকার শত কোটি টাকা পেয়েছিল। এসব কারণে বাংলাদেশের টেলিকম বাজারে ভারতী এয়ারটেলের অন্তর্ভুক্তি সুস্থ প্রতিযোগিতার জন্ম নাও দিতে পারে, এমনটাই আশঙ্কা করছেন টেলিকম বিশেষজ্ঞরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন টেলিকম বিশেষজ্ঞ বলেন, অপটিক্যাল ফাইবার কানেক্টিভিটি নিশ্চিত করতে পারলে এয়ারটেল ভালো ব্যবসা করতে পারবে এদেশে। কিন্তু তারা যদি ভারত থেকে কল সেন্টারগুলো অপারেট করে, তাহলে বাংলাদেশের টেলিকম বাজারে অস্থিরতা বাড়বে।

No comments:

Post a Comment