Saturday 22 January 2011

শেয়ারবাজারে ভয়াবহ বিপর্যয়



কাওসার আলম
দেশের পুঁজিবাজারে দরপতনে সব রেকর্ড ভেঙে ভয়াবহ বিপর্যয় ঘটেছে। গতকাল একদিনেই দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাধারণ সূচকের পতন হয়েছে ৬০০ পয়েন্ট। শতাংশ হিসাবে এ হার ৭ দশমিক ৭৬। এ ঘটনায় কয়েক লাখ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী পুঁজি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। বিনিয়োগকারীদের বোবাকান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে শেয়ারবাজারের বাতাস। সব হারানোর শোকে মুহ্যমান হয়ে পড়েছেন তারা। মুনাফার আশায় যেসব সাধারণ বিনিয়োগকারী শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করেছিলেন, এখন তা পরিণত হয়েছে দুঃস্বপ্নে। ১৯৯৬ সালের বিপর্যয়ে হাজার হাজার বিনিয়োগকারী পুঁজি হারিয়ে পথে বসেছিল। এখন অব্যাহত দরপতনে ’৯৬ সালের চেয়েও ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখে পড়েছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।
এদিকে গতকাল শেয়ারবাজারের ইতিহাসে ভয়াবহ বিপর্যয় হলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর অবস্থানের কারণে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা বিক্ষোভ সমাবেশ করতে পারেনি। বিনিয়োগকারীরা ছিলেন অবরুদ্ধ। সকাল থেকেই মতিঝিলে ডিএসই ভবন এবং তার আশপাশের এলাকায় বিপুল সংখ্যক র্যাব-পুলিশ মোতায়েন করা হয়। বিনিয়োগকারীরা যাতে কোনো অবস্থায় বিক্ষোভ করতে না পারে সেজন্য রাস্তায় কয়েকজন একসঙ্গে জড়ো হওয়া মাত্রই তাদেরকে সরিয়ে দিতে প্রস্তুত ছিল র্যাব ও পুলিশ সদস্যরা। পুলিশের মাত্রাতিরিক্ত বাড়াবাড়ির শিকার হন ওই এলাকায় কর্তব্যরত সাংবাদিকরা। প্রথম আলোর বিশেষ প্রতিনিধি মনজুর আহমেদকে পুলিশ আটক করে ভ্যানে উঠিয়ে নেয়। পরে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। অবশ্য শেয়ারবাজারে দরপতনের ঘটনায় দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ, ভাংচুর করেছে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। বিভিন্ন রাস্তা অবরোধ করে এবং শেয়ারবাজারের দরপতনের কারণে এসইসি চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের পদত্যাগ দাবি করেন তারা।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এ বছরের প্রথম লেনদেন দিবস ছাড়া বাকি ৫ লেনদেন দিবসে শেয়ারবাজারে বড় ধরনের দরপতন হয়েছে। বছরের শুরুতে ডিএসই’র বাজার মূলধন ছিল ৩ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকার বেশি। গতকাল লেনদেন শেষে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকায়। অর্থাত্ এ বছরের মাত্র ৬ লেনদেন কার্যদিবসে বাজার মূলধন কমেছে ৪০ হাজার কোটি টাকা। অপরদিকে ডিএসই সাধারণ সূচক কমেছে ১ হাজার ১৫৫ পয়েন্ট। বছরের শুরুতে ডিএসই সাধারণ সূচক ছিল ৮ হাজার ২৯০ পয়েন্ট, যা গতকাল দিনশেষে ৭ হাজার ১৩৫ পয়েন্টে নেমে আসে। এর মধ্যে গতকাল একদিনেই সাধারণ সূচক কমেছে সর্বোচ্চ ৬০০ পয়েন্ট। বাজার মূলধন কমেছে প্রায় ১৯ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। দরপতনের এ ঘটনায় ভাগ্য বিপর্যয়ের মুখে পড়েছেন লাখ লাখ সাধারণ বিনিয়োগকারী। তাদের অধিকাংশের অভিযোগ, সিন্ডিকেটের কারসাজি, নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি) ও সরকারের অদূরদর্শিতায় শেয়ারবাজারে এ বিপর্যয় ঘটেছে।
বাজারে অব্যাহত দরপতনে বিনিয়োগকারীদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি) চেয়ারম্যান জিয়াউল হক খোন্দকার। তিনি বিনিয়োগকারীদের সহনশীল আচরণ ও ধৈর্য ধরার পরামর্শ দিয়ে বলেন, শেয়ারবাজারের স্থিতিশীলতার স্বার্থে এসইসি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেবে।
এদিকে গতকাল এসইসি কর্মকর্তাদের সঙ্গে দুই স্টক এক্সচেঞ্জ কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে বাজারের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে ৪টি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এগুলো হলো—গ্রামীণফোনের শেয়ারের বিপরীতে নেটিং সুবিধা চালু, ব্যক্তির ক্ষেত্রে মার্জিন লোন সুবিধার সীমা প্রত্যাহার, নতুন বিও অ্যাকাউন্ট খোলার ১৫ দিন পরই ঋণ সুবিধা এবং সালভো কেমিক্যালের আইপিও আবেদনের সময় পরিবর্তন। তবে এসইসির এসব সিদ্ধান্তে বাজার পরিস্থিতির উন্নতি হবে কিনা, তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট মহলে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তারল্য সঙ্কটের কারণে গত মাস থেকেই মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউসগুলো তাদের গ্রাহকদের ঋণ সুবিধা দিতে পারছিল না। ফলে ঋণ সুবিধা বাড়ানো হলেও তাতে খুব একটা লাভ হবে না বলেই সংশ্লিষ্টদের ধারণা।
এদিকে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বাজারে তারল্য সঙ্কট এবং বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থার সঙ্কট তৈরি হওয়ায় বাজারে বড় ধরনের দর সংশোধন হয়েছে। এ অবস্থায় তারা বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কগ্রস্ত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তারা বলেন, যারা মৌল ভিত্তিসম্পন্ন কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেছেন, তাদের উচিত হবে শেয়ার ধরে রাখা। অযথা আতঙ্কগ্রস্ত না হয়ে ধৈর্য ধরা উচিত বলে তারা মনে করেন। বর্তমানে শেয়ারবাজারে কিছুটা তারল্য সঙ্কট রয়েছে। তবে এ সঙ্কট কাটিয়ে বাজার আবার স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে ফিরে আসবে বলে মনে করেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।
বাজার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, গত ক’দিন ধরেই বাজারে দর সংশোধন হচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় একদিনেই ৬০০ পয়েন্টের পতন হয়েছে। এটিকে ‘বিপর্যয়’ না বলে বরং বেশিমাত্রায় দর সংশোধন হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ও ডিএসইর সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সালাহউদ্দিন আহমেদ খান বলেন, বাজারে তারল্য সঙ্কটের কারণে শেয়ারের অতিরিক্ত দর সংশোধন হচ্ছে। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হওয়ায় তারা ভালো কোম্পানির শেয়ারও বিক্রি করে দিচ্ছেন। এ অবস্থায় বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কগ্রস্ত না হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। তবে গতকাল একদিনেই ৬০০ পয়েন্টের পতনকে বিপর্যয় বলে মন্তব্য করেছেন বাজার বিশ্লেষক ও বেসরকারি সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান এইমস বাংলাদেশের এমডি ইয়াওয়ার সাঈদ। তিনি বলেন, একদিনে ৬০০ পয়েন্ট পতন স্বাভাবিক ঘটনা নয়। একে বিপর্যয়ই বলতে হবে।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, ডিএসইতে ২৪৪টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড ও করপোরেট বন্ডের লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে মাত্র ৩টির, বাকি ২৪১টি তাদের দর হারিয়েছে। যে তিনটি কোম্পানির শেয়ারের দর বেড়েছে, সেগুলো হলো—রহিম টেক্সটাইল, মুন্নু স্টাফলার এবং এপেক্স স্পিনিং। বাকি সবক’টির দরই কমেছে। দরপতনের এ ঘটনা শেয়ারবাজারের ইতিহাসে নজিরবিহীন। কোম্পানিগুলোর দরপতনে গতকাল একদিনেই ডিএসইর সাধারণ সূচক কমে গেছে ৬০০ পয়েন্ট। পুঁজিবাজারের ইতিহাসে এ যাবত্কালের এটিই সর্বোচ্চ দরপতনের ঘটনা। এর আগে মাত্র ১৫ কার্যদিবস আগে গত ১৯ ডিসেম্বর একদিনে সর্বোচ্চ দরপতন হয়েছিল ৫৫১ পয়েন্টের। ১৯৯৬ সালে শেয়ারবাজারে নভেম্বর মাসে রেকর্ড ২৩৩ পয়েন্টের পতন হয়েছিল। ১৯৯৬ সালের তুলনায় গতকাল ১৩৬.৪৮ শতাংশ বেশি দরপতন হয়েছে।
শেয়ারবাজারে অব্যাহত দরপতনের কারণে কয়েক লাখ সাধারণ বিনিয়োগকারী পুঁজি হারিয়ে পথে বসার উপক্রম হয়েছে। ব্যাংকের আমানত, সঞ্চয়পত্র ভেঙে, পেনশনের টাকা নিয়ে অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তারা শেয়ারবাজারে মুনাফা লাভের আশায় বিনিয়োগ করেছিলেন। ব্যাংকের আমানত ও সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমে যাওয়ায় বাড়তি লাভের আশায় ঝুঁকিপূর্ণ শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করেছেন তারা।
এদিকে শেয়ারবাজার অতিমূল্যায়িত হলেও সরবরাহ না বাড়ার কারণে বাজারে বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটবে বলে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করেছিলেন। এমনকি দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জের প্রেসিডেন্টদ্বয় গত ৯ অক্টোবর যৌথ সংবাদ সম্মেলনে সরকারের প্রতি হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছিলেন, দ্রুত সরকারি শেয়ার বাজারে ছাড়া না হলে শেয়ারবাজারে বিপর্যয় হবে। আর এজন্য দায়ী থাকবে সরকার। তাদের এ ঘোষণার পরও সরকারি শেয়ার বাজারে ছাড়া হয়নি। আর তাদের ঘোষণার মাত্র দুই মাসের মাথায় দেশের পুঁজিবাজারের ইতিহাসে ভয়াবহ দরপতন ঘটে, যা এখন পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে। গত ৮ ডিসেম্বর থেকে গতকাল পর্যন্ত দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাধারণ মূল্য সূচক কমেছে ১ হাজার ৪৫০ পয়েন্ট। অপরদিকে একই সময়ে বাজার মূলধন কমেছে ৪৬ হাজার কোটি টাকা।
বাজার অস্থিরতার পেছনে নিয়ন্ত্রক সংস্থার ঘন ঘন সিদ্ধান্ত পরিবর্তনকেও দায়ী করছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। এদিকে গতকালও এসইসি নতুন করে ৪টি সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এসইসির চার সিদ্ধান্ত : গ্রামীণফোনের শেয়ারের বিপরীতে নেটিং সুবিধা চালু করা হয়েছে, যা আজ থেকে কার্যকর হবে। মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউস থেকে কোনো ব্যক্তি সর্বোচ্চ ১০ কোটি টাকা মার্জিন ঋণ সুবিধা নিতে পারতেন। গতকাল তার সীমা অনির্দিষ্ট করে দিয়েছে এসইসি। এর ফলে একটি মার্চেন্ট ব্যাংক একজন গ্রাহককে যে কোনো পরিমাণে ঋণ সুবিধা দিতে পারবে। নতুন বিও অ্যাকাউন্ট খোলার প্রথম ১৫ দিন পরই মার্জিন লোন সুবিধা পাবেন গ্রাহকরা। আগে ৩০ দিন পর্যন্ত মার্জিন লোন সুবিধা পেতেন না গ্রাহকরা। অপরদিকে সালভো কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজের আইপিও সময় ৩০ জানুয়ারির পরিবর্তে ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে।
বাজার বিশেষজ্ঞদের অভিমত : পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, বাজারে তারল্য সঙ্কট রয়েছে। আর এ সঙ্কট মোকাবিলায় বড় বিনিয়োগকারী, অর্থাত্ ব্যাংক, ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, লিজিং কোম্পানি, মার্চেন্ট ব্যাংক ও সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠানগুলো সক্রিয় অংশ নিলে বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে। তিনি আরও বলেন, সংশোধনের মাধ্যমে এখন বাজার অনেকটা নিচ দিকে চলে এসেছে। এ অবস্থায় বাজারে আর বেশি কারেকশন হবে না বলে মনে করেন তিনি।
ডিএসইর সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সালাহ উদ্দিন আহমেদ খান বলেন, বাজার পরিস্থিতির উন্নতির জন্য ক্রয়ক্ষমতা বাড়াতে হবে। বাজারের স্থিতিশীলতার জন্য দীর্ঘমেয়াদি পলিসি নিতে হবে। পুঁজিবাজারবিষয়ক সিদ্ধান্তগুলোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং এসইসির একটি সমন্বয় থাকতে হবে। আর বাজার সংশোধন এমনভাবে হওয়া উচিত যাতে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা বড় ধরনের ক্ষতির শিকার না হন। জোর করে দর সংশোধন করা কখনও কাম্য নয়।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের প্রেসিডেন্ট ফখর উদ্দিন আলী আহমেদ বলেন, বিনিয়োগকারীরা আস্থার অভাবে তাদের ভালো শেয়ারই বিক্রি করে দিচ্ছেন। যারা মৌলভিত্তি দেখে শেয়ার কিনেছেন তাদের আতংকগ্রস্ত না হয়ে উচিত শেয়ার ধরে রাখা। বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বাজার অতিমূল্যায়িত হয়ে পড়ায় অনেক কোম্পানির পিই অনুপাত ২০০ থেকে ৩০০-তে পৌঁছেছিল। এখন বাজারে দর সংশোধন হচ্ছে বলে জানান তিনি।
এদিকে দেশের শেয়ারবাজারে ভয়াবহ দরপতনের প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ সমাবেশ, মিছিল, ভাংচুর হয়েছে। এসব বিষয়ে আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো রিপোর্ট :
সিলেট : শেয়ারের অব্যাহত দরপতনে সিলেটের বিনিয়োগকারীরা গতকাল রাস্তায় বিক্ষোভ করেন। এ কারণে সিলেটের অধিকাংশ ব্রোকারেজ হাউসে এক ঘণ্টা লেনদেন বন্ধ ছিল। বিনিয়োগকারীরা বেলা ১টার দিকে চৌহাট্টায় ডিএসই ও সিএসই অফিসের সামনে এসে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। এ সময় তারা ডিএসই প্রেসিডেন্ট এবং সিএসই প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ দাবি করেন।
বিনিয়োগকারী সিরাজুল ইসলাম জানান, দরপতনের কারণে তারা বিক্ষোভ করেছেন। তিনি বলেন, শেয়ারের অব্যাহত দরপতনে সিলেটের স্বল্প পুঁজির তরুণ বিনিয়োগকারীরা বেশ হতাশ হয়ে পড়েছেন।
রাজশাহী : পুঁজিবাজারে অস্বাভাবিক দরপতনের কারণে গতকাল ক্ষুব্ধ বিনিয়োগকারীরা রাজশাহীতে ব্যাপক বিক্ষোভ করেছেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিনিয়োগকারীরা রাস্তায় নেমে সাহেববাজারে বিক্ষোভ মিছিল করেন। মিছিলটি নগরীর সাহেববাজার জিরো পয়েন্ট হয়ে কুমারপাড়ায় আইসিবি কার্যালয়ের সামনে গিয়ে সমাবেশ করে। গতকাল দুপুর ১২টায় বিক্ষোভ চলাকালে বিনিয়োগকারীদের চাপের মুখে আইসিবি ও অন্যান্য ব্রোকারেজ হাউসে শেয়ার বেচাকেনা বন্ধ হয়ে যায়। দুপুর আড়াইটায় আবার চালু হয়। এসময় তারা আইসিবি কার্যালয়ে ভাংচুর চালানোর চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয়। পরে পুলিশ এসে আবার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। বিনিয়োগকারীরা এ পরিস্থিতিতে এসইসি চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের পদত্যাগ দাবি করেন।
বগুড়া : শেয়ারবাজারে অব্যাহত দরপতনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ ও সড়ক অবরোধ করেছেন বগুড়ার বিনিয়োগকারীরা। গতকাল বেলা ২টায় শহরের বড়গোলা আইসিবি থেকে মিছিলটি বের হয়। মিছিল শেষে বিনিয়োগকারীরা বড়গোলায় সড়ক অবরোধ করেন। মিছিলকারীরা শেয়ারবাজারে ভয়াবহ দরপতনের কারণ হিসেবে এসইসিকে দায়ী করেন। বিনিয়োগকারীরা অর্থমন্ত্রী, বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর এবং এসইসি ও ডিএসই প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ দাবি করেন। বিনিয়োগকারীরা বলেন, অব্যাহত দরপতনের কারণে হাজার হাজার বিনিয়োগকারী পুঁজি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছেন।


No comments:

Post a Comment