Friday 7 January 2011

সিপিডির মূল্যায়ন : সরকারের অব্যবস্থাপনায় গতি পায়নি অর্থনীতি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) বলেছে, বিদ্যুত্ ও জ্বালানি খাত দেশের অর্থনীতিতে দুষ্টচক্র তৈরি করেছে। আর সমন্বয়হীনতার কারণে বিদ্যুত্ খাতে উত্পাদন পরিস্থিতির উন্নয়ন হচ্ছে না। এছাড়া রেন্টাল বিদ্যুত্ কেন্দ্র থেকে অধিক দামে বিদ্যুত্ কেনা সরকারের জন্য দুষ্টক্ষত তৈরি করবে বলে মনে করছে গবেষণা সংস্থাটি। সিপিডি আরও বলেছে, সরকারের অব্যবস্থাপনার কারণে দেশের অর্থনীতি গতি পায়নি, উপরন্তু অর্থনীতি নানামুখী চাপের মুখে রয়েছে। আইএমএফ ও ভারত থেকে ঋণ নেয়ার সমালোচনা করে তারা বলেছে, কঠিন শর্তযুক্ত এ ঋণ নেয়ার প্রয়োজন নেই।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণকালে দেশের পুঁজিবাজারের বর্তমান ‘বুদবুদ’ পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। সিপিডি বলেছে, ছলচাতুরীর আশ্রয় নিয়ে বাজার বিকৃতির সংগঠিত প্রচেষ্টায় দেশের পুঁজিবাজার অতিমূল্যায়িত হয়ে আছে, যা দেশের প্রকৃত অর্থনীতিতে কৃত্রিম অবস্থা সৃষ্টি করছে। এ অবস্থায় মূল্য সংশোধন হবে, না পুঁজিবাজারে ধস নামবে—তা বলা মুশকিল। তবে বর্তমান পুঁজিবাজার পরিস্থিতিতে আশঙ্কা ব্যক্ত করে সিপিডি বলেছে, লাখ লাখ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীকে সুরক্ষা দিতে সরকারকে এখনই একটা কিছু করতে হবে। তা করা না হলে পুঁজিবাজারের এ অবস্থা রাজনীতিকে কলুষিত করে দেশে একটি যোগসাজশের অর্থনীতি সৃষ্টি হতে পারে বলে সিপিডি মনে করে।
গবেষণা সংস্থাটির ধানমন্ডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে বেশ কয়েকটি খাতে ঝুঁকি চিহ্নিত করা হয়। এগুলো হচ্ছে বিনিয়োগ পরিস্থিতি, মূল্যস্ফীতি, জ্বালানি ও বিদ্যুত্, পুঁজিবাজার এবং বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও রেমিট্যান্স আয়। এছাড়া আইএমএফের কাছ থেকে ঋণ নেয়া ও সঙ্কোচনমূলক মুদ্রানীতির মাধ্যমে মূল্যস্ফীতির রাশ টেনে ধরতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছে সিপিডি। এছাড়া ভারতীয় ঋণে প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্পর্কে সিপিডির মতামত জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে। এতে বক্তব্য রাখেন সিপিডির সাবেক নির্বাহী পরিচালক ও সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। এ সময় নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান, জ্যেষ্ঠ গবেষণা পরিচালক ড. উত্তম কুমার দেবসহ অন্যান্য কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে সিপিডি বলেছে, ২০১০-১১ সালের প্রথমার্ধ পর্যন্ত বাংলাদেশের অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা ছিল এবং অর্থনীতিতে সম্ভাবনাময় পরিস্থিতি বিরাজ করছিল। আর সম্ভাবনাময় পরিস্থিতির বিপরীতে সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার কিছু খাতে ‘টান টান’ পরিস্থিতি বিরাজ করেছে। দেবপ্রিয় বলেন, রেমিট্যান্স, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও বিনিয়োগে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি এবং আমদানি চাহিদা বাড়ার কারণে আর্থিক খাতের ভারসাম্য রক্ষায় এক ধরনের চাপ তৈরি হয়েছে ঠিক, কিন্তু সঠিক আর্থিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এই চাপ সামলানোর ক্ষমতাও রয়েছে দেশের।
সিপিডি সমালোচনা করে বলেছে, বর্তমান সরকারের অব্যবস্থাপনার কারণে দেশের অর্থনীতি গতি পায়নি এবং বর্তমানে অর্থনীতি নানামুখী চাপের মুখে রয়েছে। রাজস্ব আদায় পরিস্থিতি ভালো থাকা সত্ত্বেও ঘাটতি অর্থায়নে সরকারকে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ঋণ নিতে হবে। কারণ, বিদেশি ঋণ সহায়তা ও সঞ্চয়পত্র বিক্রির পরিমাণ কমে গেছে। কমে গেছে এনবিআর-বহির্ভূত খাত থেকে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণও। অন্যদিকে সরকার বিশাল আকারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি প্রণয়ন করলেও তা বাস্তবায়নের হার বিগত বছরগুলোর তুলনায় অনেক কম। এছাড়া সরকারের পিপিপি উদ্যোগও কোনো কাজে আসেনি। পিপিপির আওতায় মাত্র দুটি প্রকল্প নির্বাচন সম্ভব হয়েছে। সিপিডির গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) ক্ষেত্রে গত ছয় মাসে তেমন কোনো সফলতা আসেনি। ২৩টি প্রকল্প পিপিপির অধীনে বাস্তবায়নের কথা থাকলেও অগ্রগতি হয়েছে মাত্র দুটির ক্ষেত্রে। এর কারণ পিপিপি অব্যবস্থাপনাতে এবং আইনি কাঠামোর দুর্বলতা।
এছাড়া নির্ধারিত জিডিপি অর্জনে সরকারের আন্তরিকতায় ঘাটতি রয়েছে। ৬.৭ শতাংশ জিডিপি অর্জনে যে কর্মকাণ্ড হাতে নেয়া দরকার, সেরকম কোনো অর্থনৈতিক কর্মসূচি সরকারের কাছ থেকে আসেনি।
সিপিডির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এডিবি বাস্তবায়নও সন্তোষজনক নয়। এডিবির আকার গতবছরের চেয়ে ৪৮ শতাংশ বাড়িয়ে ধরা হলেও গত ৬ মাসে অর্জন ৩০ শতাংশের নিচে।
দেশের সার্বিক বিনিয়োগ পরিস্থিতিকে ‘মিশ্র’ হিসেবে আখ্যায়িত করে সিপিডি বলেছে, শিল্প স্থাপনের জন্য মেয়াদি ঋণের পরিমাণ, কাঁচামাল আমদানি বেড়েছে, বেড়েছে কৃষিঋণ বিতরণের পরিমাণও। কিন্তু লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে—যে আমদানি হয়েছে, তার ৪০ ভাগই কুইক রেন্টাল বিদ্যুত্ প্লান্টের যন্ত্রপাতি। কাজেই আমদানি বাড়ার ঘটনা দেশের শিল্পখাতে উত্পাদন বাড়াবে কিনা, তা নিশ্চিত করে বলা যায় না।
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জ হলেও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি অনুসরণের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তার সমালোচনা করেছে সিপিডি। সিপিডি বলেছে, মূল্যস্ফীতি কমানোর জন্য মুদ্রানীতি কার্যকর কোনো অস্ত্র নয়। যারা এটা মনে করেন, তারা বাস্তবতাবিবর্জিত। ঋণপ্রবাহ অব্যাহত রেখে বাজারে পণ্যের সরবরাহ বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে সিপিডি। অন্যদিকে বর্তমানে চালের দাম বৃদ্ধির ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করে বলা হয়েছে, আউশ ও আমনের উত্পাদন ভালো হয়েছে। বোরোর উত্পাদনও ভালো হবে ধারণা করা হচ্ছে। এমন অবস্থায় চালের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কোনো যৌক্তিকতা নেই। তাহলে চালের উত্পাদন বাড়িয়ে বলা হচ্ছে, নাকি দেশে জনসংখ্যার পরিমাণ আরও বেশি—এমন প্রশ্ন উত্থাপন করে সিপিডি কৃষি পরিসংখ্যানের ওপর বেশি গুরুত্ব দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
সিপিডি মনে করে, বিদ্যুত্ ও জ্বালানি খাত দেশের অর্থনীতিতে দুষ্টচক্র তৈরি করছে। আর সমন্বয়হীনতার কারণে বিদ্যুত্ উত্পাদন পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে না। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০টি প্রকল্প থেকে জাতীয় গ্রিডে ১০২১ মেগাওয়াট নতুন বিদ্যুত্ যুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ১৬টি প্রকল্পের কাজ বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে শুরু হয়েছিল। বর্তমান সরকারের আমলে নেয়া প্রকল্প থেকে ৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত্ জাতীয় গ্রিডে সংযুক্ত হয়েছে। অন্যদিকে কুইক রেন্টাল পদ্ধতির মাধ্যমে যেসব বিদ্যুত্ কেন্দ্র নির্মাণের প্রস্তুতি চলছে, তা কতটা ফলপ্রসূ হবে—তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সিডিপি। কারণ ওইসব বিদ্যুত্ কেন্দ্র থেকে অধিক দামে বিদ্যুত্ কিনতে হবে সরকারকে। যা এ খাতে সরকারের ভর্তুকির পরিমাণ বাড়িয়ে দেশের অর্থনীতিতে একটি দুষ্টক্ষত তৈরি করবে।
অন্যদিকে দেশের পুঁজিবাজারের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সিপিডি। সংস্থার মতে, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিকল্প বিনিয়োগের সুযোগ কম বলে সাধারণ জনগণ পুঁজিবাজারের দিকে ঝুঁকেছে। পুঁজিবাজার ব্যবস্থাপনায় ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি)। পুঁজিবাজারে যে হারে প্রবৃদ্ধি হয়েছে, তা দেশের প্রকৃত অর্থনীতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। পুঁজিবাজারে বর্তমান অস্বাভাবিক পরিস্থিতির পেছনে চারটি কারণ উল্লেখ করেছে সিপিডি। উত্পাদনশীল খাতে বিনিয়োগের সুযোগ কম থাকা, পুঁজিবাজারে নিয়ন্ত্রক সংস্থার অদক্ষতা, ফটকাবাজি ও আর্থিক খাতে অসামঞ্জস্য পুঁজিবাজারে বর্তমান ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে বলে সিপিডি মনে করে।
এদিকে আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে ১০০ কোটি ডলার ঋণ নেয়ার সরকারি সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে সিপিডি বলেছে, এখন এ ধরনের ঋণ নেয়ার প্রয়োজন নেই। ঋণ নিলে সরকার তার ঘোষিত নীতি বাস্তবায়নে আইএমএফের শর্তের বেড়াজালে আটকে পড়বে। আর সরকার যদি ঋণ নেয় তাহলে তা যেন স্বচ্ছতা ও বিচক্ষণতার সঙ্গে করা হয়। সামষ্টিক অর্থনীতিতে এমন কোনো অস্থিতিশীলতা তৈরি হয়নি, প্রবৃদ্ধি ধরে টান দিতে হবে বা আইএমএফ থেকে ঋণ নিতে হবে। গত কয়েক বছর আইএমএফের নানা প্রস্তাবকে এড়িয়ে থেকেছে বাংলাদেশ। এখন কী কারণে এ ঋণের দরকার পড়ল—এ প্রশ্ন রেখে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন, এ ঋণ প্রবৃদ্ধির ধারাকে আরও বাধাগ্রস্ত করবে। সরবরাহকারী ঋণকে (সাপ্লায়ার্স ক্রেডিট) অর্থ সংগ্রহের সবচেয়ে দামি উত্স উল্লেখ করে দেবপ্রিয় বলেন, সরকার যখন একেবারেই নিরুপায় হয়ে পড়ে অর্থাত্ অর্থ সংগ্রহের আর কোনো উত্সই খোলা থাকে না, তখন সরবরাহকারী ঋণ নেয়ার দরকার পড়ে। কিন্তু বাংলাদেশে তেমন পরিস্থিতি তৈরি হয়নি এখনও।
আইএমএফের চেয়ে বরং বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে রেয়াতি শর্তে এবং দ্রুত ঋণ পাওয়া যায়, উল্লেখ করে কী শর্ত বা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ঋণ নেয়া হচ্ছে, জনগণের সামনে তা পুরোপুরি প্রকাশ করা উচিত বলে মনে করেন দেবপ্রিয়। তবে তিনি এও মনে করেন, সব ধরনের আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকেই ঋণ নেয়ার জন্য বিচক্ষণতার প্রয়োজন রয়েছে। ঋণ নেয়ার আগে অভ্যন্তরীণ উেসর মাধ্যমে প্রয়োজন মেটানো যায় কিনা তা বিবেচনা করা দরকার বলে দেবপ্রিয় মন্তব্য করেন।
অন্যদিকে ভারতের এক্সিম ব্যাংক থেকে সরবরাহকারী ঋণের বিষয়ে সিপিডি বলেছে, আজকাল শর্তায়িত উত্স থেকে পণ্য কেনার রীতি বিশ্বের কোথাও নেই। এ ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ‘কার্টেল’ করে পণ্যের দাম বাড়ানোর নজির আছে। ক্রয় প্রত্রিক্রয়া যাতে স্বচ্ছ থাকে সেদিকে নজর রাখতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সিপিডি।
সরকার চলতি অর্থবছরে অর্থনীতিতে ৬ দশমিক ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে তা অর্জন করা সম্ভব বলে সিপিডি মনে করে। তবে তা অর্জনের মূল চাবিকাঠি হচ্ছে বিনিয়োগ পরিস্থিতি ও গ্যাস, বিদ্যুতের সঙ্কট কতটা নিরসন হয় তার ওপর।
বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নের হার প্রসঙ্গে সিপিডি বলেছে, শুরুর দিকে এটা ভালো থাকলেও এখন আবার শ্লথ হয়ে গেছে। এ বছর এডিপির আকার সঠিকভাবেই বাড়ানো হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবায়ন করতে পারাটা অবশ্যই বৈপ্লবিক চিন্তা। তবে এ জন্য যে বৈপ্লবিক পদক্ষেপ দরকার, তা আর হয়নি। প্রকল্প গ্রহণ থেকে বাস্তবায়ন পর্যন্ত অনেক দেরি হয়ে যায়। ফলে তৈরি হয় নানা অভিঘাত। এডিপিতে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ পাওয়া পাঁচ খাতে সবচেয়ে কম বাস্তবায়ন হয়েছে। বিদ্যুত্ বিভাগে কম অগ্রগতির কথা উল্লেখ করে দেবপ্রিয় বলেন, বাস্তবায়নের এ যদি হাল হয়, তাহলে বরাদ্দ নীতিমালা পুনর্বিবেচনা করতে হবে কিনা বা স্বঅর্থায়ন প্রকল্পের দিকে যেতে হবে কিনা তা ভাবতে হবে।
সিপিডি বলেছে, এডিপি বাস্তবায়নে রাজনৈতিক নজরদারি থাকলেও কারিগরি নজরদারি নেই। এনবিআরের বৃহত্ করদাতা ইউনিট-এলটিইউর মতো বৃহত্ প্রকল্প ইউনিট-এলপিইউ এখনও দৃশ্যমান নয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী অর্থ ব্যয় করতে না পারাটাও সরকারের জন্য একটি বাড়তি চাপ।
সিপিডি বলেছে, অক্টোবর থেকে অক্টোবর পর্যন্ত মূল্যস্ফীতি সাত শতাংশ। এখন কিছুটা নিম্নমুখী হলেও তা স্থায়ী রূপ লাভ করবে কিনা—তা দেখার বিষয়। সম্প্রতি চালের দাম বেশ ওঠানামা করছে। পাইকারি ও খুচরা মূল্যে পার্থক্য অনেক বেশি। অথচ কৃষক দাম পাচ্ছে না। বোঝা যাচ্ছে, দাম বাড়া-কমার ওপর মিলার ও মধ্যস্বত্বভোগীদের হস্তক্ষেপ অনেক বেড়ে গেছে। আগামী দিনে সুদের হার বাড়তে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছে সিপিডি। মূল্যস্ফীতি যদি সাত শতাংশ হয় আর সুদের হার যদি ১০ শতাংশ হয়, তাহলে প্রকৃত সুদের হার দাঁড়ায় তিন শতাংশ। সুতরাং সুদের হার বাড়বেই।
চালের দাম বাড়া প্রসঙ্গে সিপিডি আরও বলেছে, কৃষি-অর্থনীতির গতি-প্রকৃতিতে কোনো পরিবর্তন এসেছে কিনা জানার কায়দা নেই। কারণ এ বিষয়ে কোনো গবেষণা নেই। উত্পাদন খরচ বেড়েছে কিনা, নাকি চালের উত্পাদনই বাড়িয়ে বলা হচ্ছে, নাকি জনসংখ্যা কমিয়ে বলা হচ্ছে ইত্যাদি প্রশ্ন রয়ে গেছে। কৃষি পরিসংখ্যানকে গভীরভাবে বিশ্লেষণ না করা হলে খাদ্য নিরাপত্তার সব পদক্ষেপই কার্যকারিতা হারাবে বলে মনে করে এ গবেষণা সংস্থা।

No comments:

Post a Comment