Saturday 22 January 2011

গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার সংবাদ সম্মেলন : প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ দেশবাসীকে চরমভাবে হতাশ করেছে

স্টাফ রিপোর্টার

গত ৬ জানুয়ারি জাতির উদ্দেশে দেয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণ সম্পর্কে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা। গতকাল নগরীর তোপখানা রোডের অস্থায়ী কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, দেশ ও জনগণের এক সঙ্কটময় সময়ে দেশবাসী প্রধানমন্ত্রীর কাছে সঙ্কট ও দুর্ভোগ থেকে বেরিয়ে আসার জন্য যে বক্তব্য ও পদক্ষেপের ঘোষণা আশা করেছিল, ভাষণ শুনে সে ব্যাপারে জনগণ চরম হতাশ হয়েছে। উল্টো প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ শোনার পর জনগণের উদ্বেগ-উত্কণ্ঠা বেড়ে গেছে।
গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা দাবি করেছে, প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ জনগণের মাঝে কোনো আস্থা সৃষ্টি করতে পারেনি। কারণ দেশের উন্নতির যে ফিরিস্তি তিনি দিয়েছেন, বাস্তবজীবনে তার কোনো প্রতিফলন নেই। বরং প্রতিদিন মন্ত্রী-এমপিরা সরকারের সাফল্যের সাফাই গেয়ে যেসব একঘেয়ে কথাবার্তা বলেন, প্রধানমন্ত্রী তারই পুনরাবৃত্তি করেছেন মাত্র।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ’৭১-এর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আ’লীগ সরকারের একটি বড় অঙ্গীকার হলেও প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের অবশিষ্ট মেয়াদে যুদ্ধপরাধীদের উপযুক্ত বিচারের ব্যাপারেও জনমনে কোনো ভরসা জাগাতে পারেননি। অন্যদিকে মহাজোট সরকারের ‘দিনবদলের সনদ’ সরকারের দুই বছরের মাথায় মুখথুবড়ে পড়ে তামাশার বস্তুতে পরিণত হয়েছে। নিজেদের ব্যর্থতার জন্য দুই বছর পরও প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক বিরোধীদের ওপর দায় চাপিয়ে পার পেতে চেয়েছেন। তাই তার ভাষণে আশাবাদ ছাড়া সঙ্কট উত্তরণের কোনো কার্যকরী নির্দেশনা দেখা যায়নি। সম্মেলনে প্রশ্ন করা হয়, প্রধানমন্ত্রী তার মেয়াদের বাকি তিন বছরও কি জনগণকে ধৈর্য ধরার কথা বলে পার করে দেবেন?
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সরকারের সীমাহীন ব্যর্থতা ও ভুল পদক্ষেপের কারণে ভরা মৌসুমেও চালের দাম দ্বিগুণ হয়েছে। অসত্ সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা জনগণকে জিম্মি করে তাদের পকেট থেকে হাজার কোটি টাকা কেটে নিচ্ছে।
গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা বলেছে, সরকার ও সরকারি দলের ছত্রছায়ায় সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, জবরদখল, দলীয়করণ, ঘুষ, দুর্নীতি, নারী নির্যাতন, খুন, ডাকাতিসহ আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি ঘটেছে। অন্যদিকে বিদ্যুত্-জ্বালানি-গ্যাস-পানি-যানজট প্রভৃতি ক্ষেত্রে অসহনীয় পরিস্থিতির কথা প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে নেই। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী অঙ্গীকার ছিল বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ করে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু এ সরকারের আমলে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও রাষ্ট্রীয় হেফাজতে মৃত্যুর মতো রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস অব্যাহত রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত দুই বছরে দুর্নীতি দমন কমিশন অকার্যকর সংস্থায় পরিণত হয়েছে। মানবাধিকার কমিশনও এখন ক্ষমতাহীন। বিচার বিভাগ কাগজে-কলমে স্বাধীন হলেও সরকারি প্রভাবের বাইরে নয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান মোর্চার সমন্বয়ক বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। এ সময় উপস্থিত ছিলেন শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, জোনায়েদ সাকী, বাবুল বিশ্বাস, নজরুল ইসলাম, আবু তাহের, হামিদুল হক, মহিউদ্দিন চৌধুরী লিটন, বহ্নিশিখা জামালী প্রমুখ।

No comments:

Post a Comment