Saturday 29 January 2011

শেয়ারবাজারে মহাধস : মতিঝিল রণক্ষেত্র : ৫০ মিনিটে সূচক পতন ৬৩৫ : ট্রেড বন্ধ : আজ চালু হবে



কাওসার আলম

আবারও ভয়াবহ বিপর্যয়ে শেয়ারবাজার। ট্রেড শুরুর আধঘণ্টার মধ্যে গতকাল ৬ শতাধিক পয়েন্ট সূচক নেমে গিয়ে দরপতনের সব রেকর্ড অতিক্রম করে ডিএসসি। এ অবস্থায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি) ৫০ মিনিটের মাথায় নজিরবিহীনভাবে ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের ট্রেড বন্ধ করে দেয়। দেশের শেয়ারবাজারের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো লেনদেন স্থগিত করার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে রাজধানীসহ সারাদেশে।
তবে আজ থেকে যথারীতি লেনদেন শুরু হবে বলে জানিয়েছে এসইসি। লেনদেন বন্ধ করে দেয়ার আগ পর্যন্ত দেশের ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাধারণ সূচকের পতন হয় ৬৩৫ দশমিক ৫৮ পয়েন্ট। শতাংশ হিসাবে এ পতনের হার ৮ দশমিক ৯০ শতাংশ। ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া ২৩৩টি কোম্পানির মধ্যে ৪টি ছাড়া সবক’টির দর কমে। গতকাল একদিনেই ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ২৩ হাজার কোটি টাকা। অপরদিকে চট্টগ্রাম শেয়ারবাজারে গতকাল সার্বিক মূল্য সূচকের পতন হয়েছে ১ হাজার ৩৬৯ পয়েন্ট। শতাংশ হিসাবে সূচক পতনের এ হার ৬ দশমিক ৭৭ ভাগ।
এদিকে দেশের শেয়ারবাজারের ইতিহাসে ভয়াবহ বিপর্যয়ের কারণে পুঁজি হারানো হাজার হাজার বিক্ষুব্ধ বিনিয়োগকারী রাস্তায় বিক্ষোভ, সমাবেশ, মিছিল, ভাংচুর করেছে। রাজধানীর দৈনিক বাংলা মোড় থেকে ইত্তেফাকের মোড় পর্যন্ত এলাকা ছিল বিক্ষুব্ধ বিনিয়োগকারীদের দখলে। বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে দফায় দফায় পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় পুরো মতিঝিল এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশ বিনিয়োগকারীদের ওপর বেপরোয়া লাঠিচার্জ করে। পুলিশের লাঠিপেটা থেকে রেহাই পাননি সাংবাদিকরা। পুলিশের লাঠিপেটার শিকার হয়েছেন এবিসি রেডিওর সীমা ভৌমিক, আমাদের অর্থনীতির মাসুদ আহমেদ, শীর্ষ নিউজের মর্তুজা ও প্রথম আলোর ওয়ারিশ। এছাড়া পুলিশ বেশ কয়েকজন বিনিয়োগকারীকেও আটক করে করে। বিনিয়োগকারীরা ডিএসই ভবন ও এসইসি কার্যালয়ের সামনে আগুন জ্বালিয়ে রাস্তা অবরোধ করে রাখে। বিনিয়োগকারীরা এসইসি কার্যালয়ে ঢোকার চেষ্টা করে ব্যর্থ হলে তারা ভবনের নিচতলায় ভাংচুর চালায়। বিক্ষুব্ধ বিনিয়োগকারীদের খণ্ড খণ্ড মিছিলে উত্তপ্ত ছিল রাজপথ। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ সমাবেশ ও ভাংচুর করেছে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।
অপরদিকে বাজারের স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে মার্জিন লোন সুবিধা বৃদ্ধি, ঋণ অযোগ্য কোম্পানির জন্য আর্থিক সমন্বয় সুবিধা চালু, মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর পোর্টফোলিও ব্যবস্থাপনার ক্ষমতা বৃদ্ধি করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। অপরদিকে পুঁজিবাজারের স্বার্থে বাংলাদেশ ব্যাংক এক খাত থেকে অন্যখাতে ঋণ সমন্বয়ের সময়সীমা বাড়িয়েছে। এসব সিদ্ধান্তের ফলে বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে বলে আশা করছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা এসইসি।
গতকাল বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে এসইসি চেয়ারম্যান জিয়াউল হক খোন্দকার বলেন, অস্বাভাবিক দরপতনের প্রেক্ষিতে শেয়ারবাজারে লেনদেন কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। মাত্র আধঘণ্টায় সূচক ৬০০ পয়েন্ট পড়ে যাওয়ার পর বিনিয়োগকারীদের স্বার্থেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে প্রথম হলেও পৃথিবীর অনেক দেশেই লেনদেন কার্যক্রম বন্ধ রাখার নজির রয়েছে। পুঁজিবাজারে গতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে এসইসির পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, লেনদেন বন্ধ রাখার পর বাজারে চলমান সঙ্কট দূর করতে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তারল্য প্রবাহ বৃদ্ধি ও বিনিয়োগকারীদের আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আগামীকাল (আজ) সকাল থেকে স্টক এক্সচেঞ্জে স্বাভাবিক লেনদেন কার্যক্রম চালুর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। এসইসি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গৃহীত বিভিন্ন সিদ্ধান্তের ফলে বাজারে স্বাভাবিকতা ফিরবে বলে তিনি প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। তিনি শেয়ারবাজারের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য তারল্য সঙ্কটকে দায়ী করেন। মুদ্রানীতির জন্য তারল্য সঙ্কট তৈরি হয়েছে বলে বলে মন্তব্য করেন এসইসি চেয়ারম্যান।
শেয়ারবাজারে ক্রমাগত দরপতনের কারণে বিক্ষুব্ধ বিনিয়োগকারীরা অর্থমন্ত্রী, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, এসইসি চেয়ারম্যান, ডিএসই প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে নানা স্লোগান এবং পদত্যাগ দাবি করেন। তারা প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধেও নানা স্লোগান দেন। এসইসি ভবনের সামনের রাস্তায় বিক্ষুব্ধ বিনিয়োগকারীদের ‘প্রধানমন্ত্রীর ... জুতা মারো তালে তালে’ স্লোগান দেন। শেয়ারবাজারের দরপতনের জন্য তারা অর্থমন্ত্রীর ভূমিকার সমালোচনা করেন এবং তার পদত্যাগ দাবি করেন। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্তের কারণে শেয়ারবাজারে ভয়াবহ বিপর্যয় ঘটছে বলে বিনিয়োগকারীরা অভিযোগ করেন। বিনিয়োগকারীরা বলেন, ব্যাংকগুলো যখন শেয়ারবাজারে অতিরিক্ত বিনিয়োগ করেছিল তখন বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এখন হঠাত্ করেই যেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ঘুম ভেঙেছে। তারা ব্যাংকগুলোর সিআরআর এবং এসএলআরের পরিমাণ বাড়িয়েছে। আবার ব্যাংকগুলোর অতিরিক্ত বিনিয়োগ প্রত্যাহার করতে বলেছে। কিন্তু শুরুতেই ব্যাংকগুলো অতিরিক্ত বিনিয়োগ করে শেয়ারবাজারে তারল্যের জোয়ার বইয়ে দিয়েছিল, এখন তাদের বাধ্য করা হয়েছে বিনিয়োগ প্রত্যাহার করতে। এর ফলে বিনিয়োগকারীর ভাগ্য বিপর্যয় ঘটছে। লাখ লাখ বিনিয়োগকারী তাদের পুঁজি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন। এর দায় নিতে হবে বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনরকে। তারা বলেন, ব্যাংকগুলো তার আমানতের সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ পর্যন্ত শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করতে পারে। কিন্তু যখন এ নিয়ম করা হয় তখন শেয়ারবাজারের সূচক ছিল মাত্র ২ হাজার পয়েন্ট। পুঁজিবাজারে পরিধিও ছিল খুব ছোট। তখনকার হিসাবে ১০ শতাংশ বিনিয়োগ বৈধ হলে এখন বাজার অনেক সম্প্রসারিত হয়েছে। ৩৩ লাখ বিনিয়োগকারীর বাজারে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগসীমা ১০ শতাংশ যথেষ্ট নয়। এ সীমা আরও বাড়ানো উচিত ছিল। অদূরদর্শী ভূমিকার জন্য বিনিয়োগকারীরা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের পদত্যাগ দাবি করেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরকে পুঁজিবাজারবিরোধী উল্লেখ করে বিনিয়োগকারীরা বলেন, গভর্নর শেয়ারবাজারকে ‘ফটকা কারবার’ বলে অভিহিত করে থাকেন। আমরা কোনো ফটকা কারবারি নই। যারা শেয়ারবাজারে কারসাজি করছে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না।
এদিকে এসইসির ঘন ঘন সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের তীব্র সমালোচনা করে বিনিয়োগকারীরা বলেন, বারবার সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের কারণে বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি। এসইসির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যেসব কোম্পানির মূল্য-আয় (পিই) অনুপাত ৪০ এর বেশি সেসব কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ ঝুঁকিপূর্ণ এবং সেসব কোম্পানির শেয়ারের বিপরীতে মার্জিন লোন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু এসইসি নিজেই বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে ৬৫ থেকে ৭০ পিই অনুপাতে কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজার থেকে টাকা তুলে নেয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। সম্প্রতি আইপিও আবেদন শেষ হওয়া মবিল যমুনা লুব্রিকেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তারা বলেন, এ কোম্পানি ৬০ এর বেশি পিই অনুপাতে শেয়ার থেকে টাকা উত্তোলন করার অনুমতি পেয়েছে কিভাবে? মাত্র ৩০ কোটি টাকার শেয়ার ছেড়ে ৫৫৫ কোটি টাকা সংগ্রহে হোটেল ইউনিক অ্যান্ড রেস্টুরেন্টকে অনুমতি দেয়া হয়েছে। অতি মূল্যায়িত বাজার থেকে কোম্পানিগুলোকে ফায়দা লুটতে এসইসি সুযোগ করে দিয়েছে বলে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা অভিযোগ করেন। এজন্য তারা এসইসির চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি করেন।
বাজার পরিস্থিতি : গতকাল শেয়ারবাজারে মাত্র ৫০ মিনিট লেনদেন হয়েছে। এরই মধ্যে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাধারণ সূচকের পতন হয় ৬৩৫ দশমিক ৫৮ পয়েন্টের। শতাংশ হিসাবে এ পতনের হার ৮ দশমিক ৯০ শতাংশ। এছাড়া ডিএসআই সূচকের ৩৮৭ পয়েন্ট এবং ডিএসই ২০ সূচকের ৫১৭ পয়েন্টের পতন হয়েছে। ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া ২৩৩টি কোম্পানির মধ্যে ৪টি ছাড়া সবক’টির দর কমেছে। কোম্পানির দরপতনের কারণে গতকাল একদিনেই ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ২৩ হাজার কোটি টাকা। গতকাল লেনদেন হয়েছে ৪০০ কোটি টাকা। অপরদিকে চট্টগ্রাম শেয়ারবাজারের সার্বিক মূল্যসূচকের পতন হয়েছে ১ হাজার ৩৬৯ পয়েন্টের। শতাংশ হিসাবে সূচক পতনের এ হার ৬ দশমিক ৭৭ ভাগ। চট্টগ্রাম শেয়ারবাজারে লেনদেন হওয়া ১৫৬টি কোম্পানির মধ্যে দাম কমেছে ১৪৭টির, বেড়েছে ৭টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ২টির দাম। লেনদেন হয়েছে ৪৪ কোটি টাকা।
কেন এ দরপতন : শেয়ারবাজারে ক্রমাগত দরপতনের জন্য বাজারের তারল্য সঙ্কটকেই দায়ী করা হচ্ছে। তারল্য সঙ্কটের কারণে মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউসগুলো গ্রাহকদের মার্জিন লোন সুবিধা দিতে পারছে না। অপরদিকে অব্যাহত দরপতনের কারণে শেয়ারের দর কমে যাওয়ায় শেয়ার বিক্রি করতে না পেরে সাধারণ বিনিয়োগকারীদেরও শেয়ার কেনার ক্ষমতা কমে যায়। দরপতনের কারণে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করলেও ক্রেতা না থাকায় শেয়ারের দরপতন ঘটে। তবে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরাও এ ক্ষেত্রে সাধারণ বিনিয়োগকারীর মতো আচরণ করায় পরিস্থিতি আরও সঙ্কটময় হয়ে ওঠে। এদিকে কারসাজি করে শেয়ারের দরপতন ঘটানো হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
লেনদেনের সেটেলমেন্ট হবে : শেয়ারবাজারে গতকাল ৫০ মিনিট লেনদেন হওয়ায় লেনদেন বাতিল করা হবে বলে জোর গুঞ্জন ওঠে। তবে লেনদেনের সেটেলমেন্টট হবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের প্রেসিডেন্ট ফখর উদ্দিন আলী আহমদ। তিনি বলেন, যে পরিমাণ লেনদেন হয়েছে তার সেটেলমেন্ট করা হবে। সেটেলমেন্ট করা না হলে আইনি জটিলতায় পড়তে হবে বলে জানান তিনি।
এসইসির সাবেক চেয়ারম্যানের বক্তব্য : এসইসির সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে বলেন, বাজারে যা ঘটছে তা দুভার্গজনক। বাজারে সংশোধন অনিবার্য ছিল। তবে এ সংশোধন খুব দ্রুত হয়েছে। এতে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা আর্থিক ক্ষতির শিকার হয়েছেন। যাদের হাতে শেয়ার ছিল তারা অতি দ্রুত পতনের কারণে শেয়ার বিক্রি করতে পারেননি। তিনি বিনিয়োগকারীদের ধৈর্য ধরার পরামর্শ দিয়ে বলেন, যাদের হাতে ভালো শেয়ার রয়েছে তাদের উচিত ধৈর্য ধরা। এসইসির সিদ্ধান্তের ফলে বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে কিনা—জানতে চাইলে তিনি বলেন, এসব সিদ্ধান্তের ফলাফল কী হবে তা বলা মুশকিল। তিনি বাজারের স্থিতিশীলতার ওপর জোর দিয়ে বলেন, বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরে না এলে তা কঠিন হবে

No comments:

Post a Comment