Wednesday 23 November 2011

আইন বিশেষজ্ঞদের অভিমত : ট্রাইব্যুনালে বিচারপতি নিজামুল হকের নিয়োগ বেআইনি : যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থার শুনানি আজ


স্টাফ রিপোর্টার

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হকের প্রতি আসামিপক্ষের দেয়া অনাস্থা আবেদনের ওপর আজ উভয়পক্ষের আইনজীবীদের শুনানির দিন ধার্য রয়েছে। বিচারপতি নিজামুল হক এর আগে এ বিচার প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত থাকায় দ্বিতীয় দফায় এই বিচারের জন্য ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হিসেবে তার নিযুক্তি বেআইনি ও বিচারকদের জন্য নির্ধারিত আচরণবিধির লঙ্ঘন বলে আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এদিকে বিচারপতি নিজামুল হককে বিচার বিভাগ ও বিচারকের মর্যাদার প্রতি সম্মান দেখিয়ে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন প্রখ্যাত আইনজীবী ও আইন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেন, বিচারপতি নিজামুল হক যেহেতু এর আগেও একবার যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়ার সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করেছেন, কাজেই বর্তমানে তার ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যানের পদে থাকা সম্পূর্ণ বেআইনি, নীতিবহির্ভূত ও গর্হিত কাজ। একজন বিচারক এ ধরনের বেআইনি কাজ করলে বিচার বিভাগের প্রতি বিচারপ্রার্থী জনগণের আস্থা থাকবে না।
বিচারপতি নিজামুল হকের বিরুদ্ধে অনাস্থা : বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষস্থানীয় ৬ জন নেতাকে বিভিন্ন অজুহাতে গ্রেফতার করার পর তাদের বিরুদ্ধে সরকারের পক্ষ থেকে কথিত যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ আনা হয়। পরবর্তীতে তাদের বিচারের জন্য বিচারপতি নিজামুল হক নাসিমের নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম এর আগে গণআদালত ও গণতদন্ত কমিশনসহ যুদ্ধাপরাধের বিচারের দাবিতে আওয়ামী লীগের উদ্যোগে গঠিত ও আয়োজিত বিভিন্ন সংস্থা ও কার্যক্রমের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন বলে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা অভিযোগ করেছেন। সম্প্রতি বিচারপতি নিজামুল হকের প্রতি ট্রাইব্যুনালে অনাস্থা আবেদন জমা দিয়েছেন তারা। ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান পদে থাকার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে পেশ করা আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, বিচারকদের আচরণবিধির ৩-এর ৬-এর ঘ অনুযায়ী যখন বিচারক কোনো ঘটনার নিজেই সাক্ষী থাকেন বা তদন্ত ও মামলা পরিচালনা করেন; সেক্ষেত্রে পরবর্তীতে তিনি আর সেই বিচার কাজে জড়িত থাকতে পারেন না। কারাগারে আটক মাওলানা সাঈদীর পক্ষে করা আবেদনে আরও বলা হয়েছে, জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে ১৯৯২ সালে গঠিত ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির গণতদন্ত কমিশনের চল্লিশ সদস্যের অন্যতম ছিলেন বিচারপতি নিজামুল হক। ওই সময় তিনি সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ছিলেন। তার সহযোগিতায় তৈরি হওয়া গণতদন্ত কমিটির রিপোর্টে জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী, জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ও মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ আনা হয়; যেহেতু তিনি এর আগে একই ঘটনার তদন্ত করেছেন, কাজেই এখন তিনি আর ওই ঘটনার বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারেন না। একই ব্যক্তির তদন্ত কর্মকর্তা আবার বিচারক হওয়া বেআইনি। এ ধরনের নজির বিশ্বের বিচারিক ইতিহাসে নেই।
আইনজীবীদের প্রতিক্রিয়া : একই ব্যক্তির একই বিচার প্রক্রিয়ায় দ্বিতীয়বার জড়িত হওয়াও সম্পূর্ণ বেআইনি ও নীতিবহির্ভূত কাজ বলে উল্লেখ করে প্রথিতযশা আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক-উল হক বলেন, কোনো বিষয়ের সঙ্গে একবার যুক্ত থাকার পর একই বিষয়ে বিচারকের দায়িত্ব পালন করা হবে সম্পূর্ণ অবৈধ, বেআইনি ও অনৈতিক। বিচারপতি নিজামুল হক গণআদালতে সম্পৃক্ত থাকলে অবিলম্বে তাকে সরে দাঁড়াবার আহ্বান জানান এই সিনিয়র আইনজীবী।
সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও খ্যাতিমান ফৌজদারি আইন বিশেষজ্ঞ অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, সরকার যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল বা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে বর্তমানে যাদেরকে গ্রেফতার করে বিচারের আয়োজন করেছে বিচারপতি নিজামুল হক নাসিমও তাদের বিচারের দাবিতে একসময় আন্দোলন করেছেন। তিনি ঘাতক দালাল নির্মূূল কমিটির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি কর্তৃক গঠিত গণতদন্ত কমিশনের সেক্রেটারিয়েটের মেম্বারও ছিলেন তিনি। এই কমিশনের তৈরি করা রিপোর্টের আলোকেই তদন্ত সংস্থা তাদের প্রতিবেদন তৈরি করে এখন বিচারপতি নিজামুল হকের নেতৃত্বে গঠিত ট্রাইব্যুনালে বিচারের জন্য পেশ করেছে। কাজেই যিনি তদন্ত করেছেন তিনিই আবার বিচার করছেন—এটা বেআইনি এবং অবিচারের শামিল। তিনি বলেন, বিচারপতি নিজামুল হক আচরণবিধি মানলে এ পদে তিনি থাকতে পারেন না। ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির গণতদন্ত কমিশনে জড়িত থাকায় নৈতিক কারণেই তার যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে থাকার কোনো আইনগত অধিকার নেই। সরকার তাকে জোর করে এ পদে রাখতে চাইলেও তার পদত্যাগ করা উচিত। বিচারপতি নিজামুল হক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারক হিসেবে তার কার্যক্রম অব্যাহত রেখে সুস্পষ্টভাবে সুপ্রিমকোর্টের বিচারকদের আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন। সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতিদের আচরণবিধিতে বলা হয়েছে, যখন কোনো বিচারকের নিরপেক্ষতা যুক্তিসঙ্গতভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হয়, তখন সেই বিচারকের বিচারিক কার্যক্রম থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেয়া উচিত।
বিচারপতি নিজামুল হক নাসিমের ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান থাকা সম্পূর্ণ বেআইনি হিসেবে উল্লেখ করে সাবেক আইনমন্ত্রী ও সুপ্রিমকোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, বিচার বিভাগের প্রতি ন্যূনতম শ্রদ্ধাবোধ থাকলে তিনি যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হিসেবে থাকতে পারেন না। ন্যায়বিচারের স্বার্থেই তাকে এ পদ থেকে সরে যাওয়া উচিত। বর্তমানে তার ট্রাইব্যুনালের কাঠগড়ায় যাদের বিচারের জন্য আনা হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি গঠিত গণতদন্ত কমিশনের তিনি অন্যতম সদস্য হিসেবে এর আগেই তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেছেন। কাজেই একই ব্যক্তির তদন্ত কর্মকর্তা ও বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন সম্পূর্ণ বেআইনি ও ন্যায়বিচার পরিপন্থী। তিনি বলেন, ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির গণআদালতের সেক্রেটারিয়েটের সদস্য ছিলেন। সে কারণে তিনি এ ট্রাইব্যুনালের বিচারক হওয়ার যোগ্যতা রাখেন না। আইনের সাধারণ নীতি হচ্ছে—কোনো ব্যক্তি যদি সাক্ষীর কোনো পর্যায়ে যুক্ত থাকেন তবে তিনি সেখানে বিচারের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে অযোগ্য ঘোষিত হবেন। বিচারপতি নিজামুল হক সরাসরি গণতদন্ত কমিশন ও গণআদালতের সঙ্গে জড়িত থাকায় তার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারে বসার আইনগত অধিকার নেই। তিনি বহুবার গণআদালতের পক্ষে বিভিন্ন সভা-সমাবেশে অংশগ্রহণ করেছেন ও বক্তব্য দিয়েছেন। বিচারপতি নিজামুল হকের সহযোগিতায় তৈরি হওয়া গণতদন্ত কমিটির তদন্ত রিপোর্টে মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ এবং মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন সেই গণতদন্ত কমিশনের তদন্ত রিপোর্টই দলিল হিসেবে ট্রাইব্যুনালে দাখিল করেছে। কাজেই বিচারপতি নিজামুল হক এই ট্রাইব্যুনালের সাক্ষী হতে পারেন, বিচারপতি হিসেবে বিচার করার আইনগত এখতিয়ার তার নেই।
সুপ্রিমকোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া বলেন, যিনি কোনো বিষয়ের তদন্তকারী কর্মকর্তা হন, তিনি আবার কি করে তার বিচারক হন—পৃথিবীর ইতিহাসে এ ধরনের ঘটনা নজিরবিহীন। বিচারপতি নিজামুল হক ১৯৯৩ সালে গণতদন্ত কমিশনের মাধ্যমে নিজামী, মুজাহিদ, সাঈদীর ফাঁসির সুপারিশ করেছিলেন। এখন তিনিই আবার এ বিষয়ে বিচারকের দায়িত্ব পালন করলে অবশ্যই একই দৃষ্টিভঙ্গিতে রায় দেবেন। তিনি বলেন, ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হবার আগে অবশ্যই বিচারপতি নাসিমের উচিত ছিল এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে অপারগতা প্রকাশ করা, তা না করে তিনি আইনি ভাষায় মিস কন্ডাক্ট করেছেন। মিস কন্ডাক্টকারী যে কোনো বিচারকের বিরুদ্ধে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলে অভিযোগ এনে শাস্তি দেয়া যেতে পারে। তিনি আরও বলেন, যেখানে কমিউনিস্ট পার্টি পর্যন্ত মনে করছে যুদ্ধাপরাধের বিচার স্বচ্ছ হওয়া দরকার, সেখানে নিজামুল হক ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থে একটি স্পর্শকাতর দায়িত্বে নিজেকে বহাল রাখতে পারেন না।
এ ব্যাপারে সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি বিচারাধীন। আবেদনটি আদালতে শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে। কাজেই এ বিষয়ে আমি আগাম কোনো মন্তব্য করতে চাই না।
খ্যাতিমান আইনজ্ঞ ও সুপ্রিমকোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক আমার দেশকে বলেন, বিচারপতি নিজামুল হকের যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান পদে থাকার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে অনাস্থা আবেদন দিয়েছে আসামিপক্ষ। এতে বলা হয়েছে, বিচারপতি নিজামুল হক এর আগে একবার এ বিচার প্রক্রিয়ার সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করেছেন। কাজেই দ্বিতীয় দফায় আবারও এ বিচার প্রক্রিয়ার সঙ্গে তার নিজেকে যুক্ত করা বেআইনি। আসামিপক্ষের এ আবেদনের পর বিষয়টি নিয়ে বিভিন্নমহলে জোরালো আলোচনা হচ্ছে। অনেকেই আমার কাছে এ বিষয়ে মন্তব্য চাচ্ছেন। এ বিষয়ে আমার বক্তব্য হচ্ছে— এই বিষয়টি এখন বিচারাধীন। ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হিসেবে বিচারপতি নিজামুল হকের নিযুক্তি ও আসামিপক্ষের আবেদনের বিষয়ে ট্রাইব্যুনালে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। ট্রাইব্যুনাল এ বিষয়ে কি সিদ্ধান্ত দেয়, আমরা সেই পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চাই। ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্তের পর এর আইনগত যৌক্তিকতা ও ভিত্তি নিয়ে কথা বলার সুযোগ থাকবে।
সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল বলেছেন, ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হিসেবে বিচারপতি নিজামুল হক বহাল থাকলে তা হবে আচরণবিধির স্পষ্ট লঙ্ঘন। প্রচলিত রীতি হচ্ছে, একই ব্যক্তি বিচারের কোনো এক পর্যায়ে নিজেকে সম্পৃক্ত করলে তিনি আর পরবর্তীতে ওই বিচার প্রক্রিয়ায় নিজেকে নিযুক্ত করতে পারেন না। এটা নীতিবহির্ভূত কাজ। বিচারপতি নিজামুল হকের বিরুদ্ধে অনাস্থা আবেদন দিয়েছেন আসামিপক্ষ। আসামিপক্ষের করা আবেদন শোনারও অধিকার বিচারপতি নিজামুল হকের নেই। সাধারণত যাদের প্রতি আকার-ইঙ্গিতে অনাস্থা আনা হয়, সুপ্রিমকোর্টের রেওয়াজ অনুযায়ী তিনি সঙ্গে সঙ্গে বিব্রতবোধ করে সরে দাঁড়ান। বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম এখন কি করেন তা দেখার বিষয়। তবে আমরা আশা করছি, তিনি বিচার বিভাগের মর্যাদার কথা চিন্তা করে নিজ থেকেই সরে দাঁড়াবেন। তিনি গোঁ ধরে বসে থাকবেন না। যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার সাবেক প্রধান আবদুল মতিনের দৃষ্টান্ত তুলে ধরে তিনি বলেন, একই ট্রাব্যুনালের তদন্ত সংস্থার প্রধানের বিরুদ্ধে এর আগে বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন উঠেছে। তিনি দেরি না করে ন্যায়বিচারের স্বার্থেই পদত্যাগ করে চলে গেছেন।
বিচারপতি নিজামুল হকের বিষয়ে দেশের খ্যাতিমান দুই মুক্তিযোদ্ধা বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম ও কর্নেল (অব.) ড. অলি আহমদ বীর বিক্রম একটি টিভি চ্যানেলে মন্তব্য করেছেন। গত শুক্রবার একটি ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রচারিত সাক্ষাত্কারে এ বিষয়ে চরম উষ্মা প্রকাশ করেছেন তারা। কাদের সিদ্দিকী বলেন, একথা ধ্রুব সত্য যে, নিজামুল হক ১৯৯২ সালে গণআদালতের তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন, মামলা পরিচালনা করেছেন। এখন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারপতি থাকা তার জন্য হবে সম্পূর্ণ অবৈধ। ড. অলি আহমদ বীর বিক্রম বলেছেন, যুদ্ধাপরাধের বিচারকে অবশ্যই প্রশ্নমুক্ত রাখতে হবে। এই বিচারের কোনো বিষয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হলে তা আন্তরিকভাবে খতিয়ে দেখতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, কোনো একজন বিচারপতির জন্য গোটা বিচার কাজ প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে না। কর্নেল অলির মতে, শুধু বাংলাদেশে নয়, এ বিচারকে সারা বিশ্বে গ্রহণযোগ্য করতে না পারলে মুক্তিযুদ্ধে আমাদের অর্জন ম্লান হয়ে যাবে।
এদিকে বিশ্বস্ত একটি সূত্রে জানা গেছে, বিচারপতি নিজামুল হক যাতে নিজ থেকেই অব্যাহতি নিয়ে সরে না যান সেজন্য সরকারের একজন প্রতিমন্ত্রী তাকে চাপ সৃষ্টি করছেন।

No comments:

Post a Comment